কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা ফেরত দিলেন

নগদ দুই লাখ ৩৮ হাজার টাকা আর ১লাখ ৮০ হাজার টাকার একটি চেক হারিয়ে বিপাকে পড়েন রংপুরের প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এরিয়া অফিসের ম্যানেজার আলমগীর হোসেন। তিন ঘণ্টা সন্ধান করেও যখন বিষয়টিকে দুর্ভাগ্য হিসেবে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছিলেন, তখনই অপরিচিত একটা নম্বর থেকে ফোন আসে তার কাছে।

আপর প্রান্ত থেকে একজন বলছিলেন, ‘আপনার কিছু হারিয়ে গেলে আমি তা কুড়িয়ে পেয়েছি।’ নিজের নাম পরিচয় প্রকাশ করে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে নিয়ে যেতে বললেন তিনি।

রোববার রংপুরের নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পাশ থেকে এ টাকা কুড়িয়ে পান আজিজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তিনি র‌্যাংগস পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের (শেল লুব্রিকেন্ট) ডেপুটি ম্যানেজার।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এরিয়া ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বলেন, তার কথাগুলো আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। বার বার মনে হচ্ছিল এতগুলো টাকা কুড়িয়ে পেয়ে ফিরিয়ে দিতে চায়, এমন মানুষ কী আসলেই আছে?

এই প্রশ্নের উত্তর আর মহানুভব মানুষটির দেখা পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি তার। মোবাইল ফোনে দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে তার দেখা পান। সঙ্গে ফেরত পান পুরো টাকা ও চেক।

আজিজুল ইসলাম নামে নির্লোভ মানুষটির বাসা রংপুর নগরীর জুম্মাপাড়া মহল্লায়। চাকরি করেন র‌্যাংগস পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের (শেল লুব্রিকেন্ট) ডেপুটি ম্যানেজার পদে।

তিনি জানান, বেলা ১টার দিকে বাসায় ফেরার পথে টিস্যুতে মোড়ানো টাকার বান্ডিলটি নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির গলিতে কুড়িয়ে পান। এত টাকা পড়ে থাকতে দেখে নিজেও খানিকটা ঘাবড়ে যান এবং ভাবতে থাকেন, টাকা হারানো মানুষটির এখন কী অবস্থা। টাকাগুলো তুলে নিয়ে বাসায় যান।

এদিকে, টিস্যু মোড়ানো প্যাকেট খুলে কিছুটা স্বস্তি পান বলে জানান আজিজ। তিনি বলেন, নগদ টাকার সঙ্গে যে চেকটি ছিল তাতে একটি মোবাইল নম্বর লেখা থাকায় সহজেই তিনি টাকার মালিককে পেয়ে যান।

রোববার বিকেল ৪টার দিকে আজিজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করলে আলমগীর হোসেনকে টাকা ও চেক ফেরত দেন।

এ সময় সাংবাদিকরা আলমগীর হোসেনকে টাকা ফেরতের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্রেফ স্বস্তি পেতে টাকাগুলো ফেরত দিয়েছি।’ আর আজিজুল ইসলাম টাকা ফেরত পেয়ে আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘এ যুগেও মানুষ আছে।’

তিনি বলেন, ‘হারাগাছ এলাকা থেকে দুজন ব্যবসায়ীর টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ব্যাংকের দিকে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে টাকাগুলো রাস্তায় পড়ে যায়, কিন্তু বুঝতে পারিনি। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। কোথাও না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি।’ টাকাগুলো না পেলে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্ট হতো বলে জানান।

এসএইচ-২৪/১৮/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)