লেমুর পরিবারে নতুন অতিথি

গত ৬ আগস্ট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হওয়া আফ্রিকান প্রাণী লেমুর থেকে দুটি বাচ্চা পাওয়া গেছে। গত ২৭ নভেম্বর বাচ্চা পাওয়া গেলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ আজ বুধবার বিষয়টি প্রকাশ করে। দেশে এই প্রথম বারের মতো লেমুর থেকে বাচ্চা পাওয়া গেল। এনিয়ে সাফারি পার্কে লেমুরের সংখ্যা দাঁড়ালো চারটিতে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিছুর রহমান জানান, উদ্ধারের পর থেকেই লেমুরকে পার্কের বিশেষ কোরেন্টাইনে রাখা হয়েছে। কোরেন্টাইনে বদ্ধ পরিবেশে গত ২৭ নভেম্বর তারা দুটি বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশের অন্য কোথাও লেমুর নেই। লেমুর দেখতে অনেকটা বানর বা হনুমানের মতো।

লেমুর হল আফ্রিকার মাদাগাস্কারের প্রাইমেট গোত্রভুক্ত কিছু প্রাণীর সমষ্টিগত নাম। যার অর্থ ভূতের মত। রাতের আধারে লেমুরের মুখে আলো ফেললে অনেকটা ভূতের মত দেখায়, তাই এর নামকরণ এভাবে করা হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে লেমুর সাধারণত আফ্রিকার মাদাগাস্কারেই দেখতে পাওয়া যায়।

এই প্রজাতিটি খুব সম্ভবত সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে মাদাগাস্কারে আবির্ভূত হয়েছিল। তখন থেকেই এই প্রজাতিটি মাদাগাস্কারের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। লেমুরের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে আচরণের অনেক পার্থক্য দেখা যায়। বড় আকারের লেমুররা সচরাচর দিনের বেলা ঘুরাফেরা করলেও ছোট আকারের গুলো নিশাচর হয়। এদের মধ্যে সামাজিক ব্যবস্থা, কার্যকলাপ, শিকার থেকে সুরক্ষিত থাকার কৌশল, প্রজনন এবং বুদ্ধিমত্তার পার্থক্যও দেখা যায়। দলবদ্ধভাবে থাকার পরও খাদ্য সংগ্রহের জন্য এরা একা বিচরণ করে এবং খাদ্যগ্রহণ শেষে পুনরায় দলে ফিরে আসে।

তিনি আরও জানান, সচরাচর লেমুররা অনেক ধরনের খাদ্য গ্রহণ করে। তবে ছোট আকারের লেমুররা পতঙ্গ এবং ফল ফলাদি খেয়ে থাকে। অপরদিকে বড় আকারের লেমুররা গাছপালা ও লতাপাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে। প্রিয় খাদ্যের তালিকায় থাকুক আর নাই থাকুক ক্ষুধার্ত লেমুররা হজমযোগ্য প্রায় সবকিছুই খেতে পারে। রিং টেইল্ড লেমুররা (গোলাকৃতি লেজের) তৃণভোজীও হয়ে থাকে। তাই এদেরকে খাদ্যের প্রাপ্যতা সাপেক্ষে সর্বভূক প্রাণী বলা চলে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, লেমুর বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশের পরিবেশে লেমুর থেকে বাচ্চা পাওয়ায় কিছুটা আশার সঞ্চয় হয়েছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতেও লেমুর থেকে বাচ্চা পাওয়া যাবে।

বিএ-১২/১২-১২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)