শেষবারের মতো এক নজর দেখতে গাড়িতে উঠেছিল শিশুটি

কেরোসিনের আগুনে পুড়ে মারা গেছেন মা রুমা আক্তার। পুলিশ নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় শেষবারের মতো মৃত মাকে এক নজর দেখতে পুলিশের গাড়িতে উঠেছিল আড়াই বছরের ছোট্ট শিশু মোহাম্মদ হোসেন।

মঙ্গলবার কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গত ২৮ জানুয়ারি দগ্ধ হয়ে আহত গৃহবধূ ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান। গৃহবধূ মারা যাওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন স্বামী ও তার স্বজনরা।

নিহত গৃহবধূ রুমা আক্তার (২৬) ঈদগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজপাড়ার মৃত ওবাইদুল হকের ছেলে ওয়াহিদ উল্লাহর স্ত্রী ও চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড দক্ষিণপাড়ার গিয়াস উদ্দীনের মেয়ে। তিনি দুটি ছেলেসন্তানের জননী।

বুধবার সকালে কক্সবাজার মডেল থানার ওসি ওপারেশন মো. মাইনউদ্দিন জানান, গৃহবধূ রুমা আক্তারের প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি ওয়াহিদুল হককে বিয়ে করেন। প্রথম ঘরে তার এক ছেলে রয়েছে। তার নাম রেদোয়ান (৭)। দ্বিতীয় স্বামীর ঘরের সন্তান হলো মোহাম্মদ হোসেন।

নিহত রুমা আক্তারের মামা আবদুল হক বলেন, প্রেম করে ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে রুমা আক্তারের বিয়ে হয়েছিল তিন বছর আগে। তবে বিয়েটি মেনে নেয়নি শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

অনেক নির্যাতন সহ্য করেও রুমা সংসার করছিল। গত ২৮ জানুয়ারি স্বামী ওয়াহিদুল হক তার ভাই মামুনর রশিদ, মোর্শেদ ও মা তফুরা বেগম রুমা আক্তারের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়।

এ সময় রুমার চিৎকারে এলাকার লোকজন এসে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়।

পরে শ্বশুরবাড়ির রুমাকে ঘরে এনে দাফনের ব্যবস্থা করছিল। এ সময় স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে।

পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই শাহাজ উদ্দীন ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান। এ সময় পুড়িয়ে মারা মাকে শেষবারের মতো দেখতে একমাত্র আদরের ছেলে মায়ের লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় মাকে দেখতে পুলিশের গাড়িতে উঠে পড়ে তার ছোট শিশু মোহাম্মদ হোসেন।

এ বিষয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গৃহবধূর মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে নিহতের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএ-০৩/০৬-০২ (আঞ্চলিক ডেস্ক, তথ্যসূত্র: যুগান্তর)