ইজতেমায় উসকানিমূলক বক্তব্য না দেয়ার অনুরোধ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

বিশ্ব ইজতেমার বয়ানে কিংবা মাঠের মধ্যে কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য না দিতে অনুরোধ জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘তারপরও কেউ উসকানিমূলক বক্তব্য দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়দানে আমাদের সাদা পোশাকে যথেষ্ট পরিমাণ নিরাপত্তাবাহিনী সজাগ থাকবেন। মুসল্লিদের সেবার জন্য মন্ত্রী, সাংসদ, এসপিসহ আমরা সকলেই প্রস্তুত আছি।’

বুধবার দুপুরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক কার্যালয় চত্বরে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি কাজের ফলোআপ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ওই সব কথা বলেন।

যেকোনো অপপ্রচারকারীকে নিরাপত্তাবাহিনী তাৎক্ষণিক শনাক্ত করতে সক্ষম উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী আগের চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ, অনেক দক্ষ। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এখন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে।

কোনো অপপ্রচারও যদি কেউ করে থাকেন তাকে আমরা এখন তাৎক্ষণিক শনাক্ত করতে পারছি। তাই সবাইকে অনুরোধ করব কেউ আপনারা উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য বা বক্তব্য দেবেন না, সে-টা ফেসবুক হোক আর সম্মুখে হোক। সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার জন্য আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি রয়েছে।’

গাজীপুর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশের আইজি জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার শাসসুন্নাহারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিগণ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা ইজতেমা মাঠে তাদের প্রস্তুতির অগ্রগতি তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বিদেশি মুসল্লিদের এ দেশে আসতে ভিসা সহজীকরণ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, তাবলিগের দুই মারকাজের তালিকা অনুযায়ী যারা যারা ভিসার আবেদন করবেন তাদের ভিসা দিতে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে বলে দেওয়া হবে। এ ছাড়া পৃথিবীর যে কোনো দেশ থেকে যদি কোনো মুসল্লির ব্যাপারে অনুরোধ থাকে তা লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে, তাহলে ভিসার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, এবারের ইজতেমা নিশ্চিত করতে কঠিন চ্যালেঞ্জ, কঠিন শপথ নেওয়া হয়েছে। ইজতেমা নিয়ে সরকারের ইমেজ যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য তিনি সবার সহযোগিতা চান।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী রাসেল বলেন, এবারের ইজতেমা অনিশ্চয়তার মধ্যে চলে গিয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় এবারের ইজতেমার বাস্তবায়ন হচ্ছে। ইজতেমা মাঠের সকল প্রস্তুতি সু-সম্পন্ন হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শৌচাগার, প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, তুরাগ নদী পারাপারে পল্টুনব্রীজ নির্মাণসহ সকল কর্ম সম্পন্ন হয়েছে।

ইজতেমাকালে গাজীপুরের মূল সড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

অনুষ্ঠানে আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ইজতেমায় অন্য বছরের তুলনায় এবার বেশি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। এবার ইজতেমা এলাকার ‘নিরাপত্তার চোখ’ সিসি ক্যামেরা আগের বছরগুলোর চেয়ে অনেক বাড়ানো হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও বেশি মোতায়েন থাকবে। তিনি দুই পক্ষের ১০ দফা সমঝোতা স্মারক মেনে চলার অনুরোধ করেন।

র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ইজতেমা শুরুর ১৫দিন আগে থেকেই ব্যাপক সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক নজরদারি শুরু হয়েছে। তিনি মোনাজাতের পর মুসুল্লিদের সুশৃঙ্খলভাবে মাঠ ত্যাগ করতে মূল মঞ্চ থেকে মুরুব্বিদের ঘোষণা দেয়ার অনুরোধ করেছেন।

বিএ-১৬/১৩-০২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)