প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কিশোরীর গাল কাটল বখাটে

বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় খাদিজা আক্তার (১৭) নামের এক কিশোরীকে ব্লেড দিয়ে গালসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গা কেটে জখম করেছে ফয়সাল বেপারী নামের এক বখাটে।

আহত খাদিজাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা জানতে পেরে মঙ্গলবার দুপুরে ফয়সাল বেপারীর বড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশ আসার খবর পেয়ে ফয়সাল বেপারী পালিয়ে যায়। ফয়সালের সন্ধান ও ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বাবা ইউনুছ বেপারী ও মা কাজলী বেগমকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

সোমবার রাতে উপজেলার পিঙ্গলাকাঠি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ফয়সাল বেপারীর বাড়ি উপজেলার বদরপুর এলাকায়। আহত খাদিজা আক্তার উপজেলার পিঙ্গলাকাঠি এলাকার জসিম মৃধার মেয়ে।

গৌরনদী থানা পুলিশের এসআই তৌহিদুজ্জামান বলেন, পারিবারিক কোন্দলের কারণে কয়েক বছর আগে খাদিজার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ ঘটে। পরে মা হাসি বেগম অন্যত্র বিয়ে করেন। খাদিজা থাকত পিঙ্গলাকাঠি এলাকায় তার নানা আকুব আলীর বাড়িতে। অর্থের অভাবে এসএসসি পাসের পর খাদিজা আর লেখাপড়ার সুযোগ পায়নি। দরিদ্র নানার সংসারে প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা দিত খাদিজা।

প্রাইভেট পড়াতে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করত ফয়সাল বেপারী। নিষেধ করলে উত্ত্যক্তের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ফয়সাল। ফয়সালের বাবা-মাকে বিষয়টি জানালে গালমন্দ দিয়ে খাদিজাকে তাড়িয়ে দেয়। সোমবার রাত ৯টার দিকে খাদিজা বাসায় ফেরার পথে প্রেমের প্রস্তাব দেয় ফয়সাল। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ব্লেড দিয়ে খাদিজার গালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে জখম করা হয়।

এসআই তৌহিদুজ্জামান আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে খাদিজাকে ফয়সাল হুমকি দিয়ে আসছিল। কাউকে ঘটনার কথা জানালে পরিণতি খারাপ হবে বলে হুমকি দেয়। হুমকির কারণে খাদিজা চেপে যাচ্ছিল বিষয়টি। তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন মঙ্গলবার দুপুরে ফোন দিয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। এরপর ফয়সাল বেপারীর বড়িতে অভিযান চালানো হয়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে ফয়সাল বেপারী পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ফয়সালের বাবা ইউনুছ বেপারী ও মা কাজলী বেগমকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

এ ঘটনায় খাদিজা আক্তার বাদী হয়ে ফয়সাল ও তার বাবা ইউনুছ বেপারী এবং মা কাজলী বেগমকে আসামি করে মামলা করবে বলেও জানান এসআই তৌহিদুজ্জামান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মো. মাজেদুল হক কাওছার বলেন, খাদিজার গালে সাতটি সেলাই দেয়া করা হয়েছে। অন্য জখমগুলো সামান্য। তবে গালের ক্ষত ঠিক হতে অনেক দিন সময় লাগবে।

বিএ-১৩/১৯-০২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)