হবিগঞ্জে ইউএনও’র বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার মামলা

সম্মানী ভাতা স্থগিত রাখার অভিযোগ এনে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসানসহ দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। সহকারী জজ শাহরিয়ার ইকবালের আদালতে মঙ্গলবার মামলাটি করেন একই উপজেলার সাতাইহাল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন আহমেদ বীরপ্রতীক।

মামলার অপর বিবাদী হচ্ছেন নবীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আব্দুর নূর। ওই মামলায় বিচারক বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কৃতিত্ব রাখায় নূর উদ্দিনকে বীরপ্রতীক খেতাব দিয়েছে রাষ্ট্র। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সমাজসেবা অধিদফতর এবং বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত হওয়ায় তিনি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে নিয়মিত সম্মানি ভাতা পান। অন্যবারের মতো গত বছরের ১৬ আগস্ট উপজেলার ৩০৪ জন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতার তালিকা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার অফিস থেকে নবীগঞ্জ সোনালী ব্যাংকে পাঠানো হয়। কিন্তু তালিকায় ৬৭ নম্বরে থাকা বাদীর নাম উল্লেখ করে ‘পরবতী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ভাতা বন্ধ থাকবে’ বলে মন্তব্য থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা তার ভাতা প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন।

একইভাবে পরবর্তী সম্মানী ভাতার তালিকায় অনুরূপ মন্তব্য থাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন ভাতা ও ঈদ বোনাস থেকে বঞ্চিত হন। এ ব্যাপারে বাদী নূর উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায় মুক্ত করার চেষ্টা করেন।

মামলায় আরও বলা হয়, একজন মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার পাশাপাশি তার ‘খেতাবি’ ভাতা পাবেন না মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত এ পর্যন্ত কোনো পরিপত্রে তা উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কোনো শত্রুপক্ষের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।

তিনি এ পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকা ভাতা পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তার সময় খেতাবধারী দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা (নাম উল্লেখ করে) মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও সমাজসেবা অধিদফতর থেকে প্রদত্ত ভাতা গ্রহণ করছেন। এ ক্ষেত্রে বিবাদীদের বৈষম্যমূলক ও ন্যায়নীতি পরিপন্থী আচরণের কারণে সম্মানি ভাতা ও ঈদ বোনাস থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে বাদী দাবি করেন।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসান বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা একাধিক ভাতা পাবেন না মর্মে ২০১৬ সালে মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। কিন্তু তার ভাতা বন্ধ হয়েছে ২০১৮ সালে। কারণ তার কয়েকজন সহযোদ্ধা অভিযোগ করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা একাধিক ভাতা পাবেন না। তবে ভাতা বন্ধ করার এখতিয়ার আমার নেই। পরে অভিযোগটিসহ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা-সংক্রান্ত কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। কমিটি তার ভাতা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

তিনি বলেন, বিষয়টি আমার নিজেরও খারাপ লাগছে। আমি তাকে বলেছি আপনি মন্ত্রণালয়ে গিয়ে কথা বলেন।

বিএ-০৯/২০-০১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)