কুমিল্লাতে তনুর ঘাতকদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের দাবি

দেশব্যাপী বহুল আলোচিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ঘাতকরা শনাক্ত ও গ্রেফতার না হওয়ায় পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠন।

বুধবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও নগরীর বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে পৃথক এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পৃথক মানববন্ধন ও সমাবেশে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে তনুর ঘাতকদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের দাবি জানান।

বেলা ১১টায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর তারা কলেজ ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সামনে মানববন্ধনে করে।

কলেজের ইতিহাস বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মো. সালাম বলেন, তনু বেঁচে থাকলে আমাদের সঙ্গে অনার্স চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা দিতেন। আমাদের মতো ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে তারও অনেক স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় আজ থেকে তিন বছর আগে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ।

তিনটি বছর পেরিয়ে গেলেও দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলতে হয় তনুর মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। আমরা হত্যাকারীদের শনাক্ত এবং মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে সিআইডি অফিসের কাছে জানতে চাইলে তারা শুধু তদন্তের কথাই বলে।

পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের উদ্যোগে তনুর জন্য দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিকে দুপুরে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে তনুর হত্যাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। এ সময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি ফারজানা আক্তার বলেন, তনু হত্যার ৩ বছর পার হলেও তার ধর্ষক ও হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা হয়নি। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে তনুর ঘাতকদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবি জানান।

এছাড়া গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার উদ্যোগে তনু হত্যার বিচার দাবিতে বিকেলে নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার মুখপাত্র খায়রুল আনাম রায়হানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে তনু আর বাসায় ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাতে তনুদের বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায় স্বজনরা।

পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ঘাতকদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।

বিএ-১২/২০-০১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)