৩৯ দিনেও গ্রেফতার হয়নি শিশু সৌরভের হত্যাকারী

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ মাগুরা গ্রামের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র সৌরভ মন্ডল হত্যাকাণ্ডের ৩৯ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনও কাউকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে হত্যাকারীদের পক্ষে তাদের স্বজন ও সহযোগীরা বিভিন্ন ভাবে সৌরভের পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তারা ওই পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।

বুধবার সকালে গৌরনদী প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নিহত সৌরভ মন্ডলের মা ভানু মন্ডল।

সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে ভানু মন্ডল বলেন, হত্যাকারীদের সহযোগীরা পাশের কালকিনি উপজেলার নবগ্রামে সৌরভের নানাবাড়ি গিয়ে আমার বাবা হরিহর মন্ডল ও আমার খালাতো ভাই রাজ্বেশ্বর পান্ডেকেও ভয়ভীতি দেখিয়ে এসেছে। তাদেরকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে মামলা তুলে না নিলে তাদেরও মেরে ফেলা হবে। তারা চাপ প্রয়োগ করে আমাকে ও আমার স্বামীকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে যে, আমার ছেলে সৌরভ মাছ চুরি করায় এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে আহত হয়ে মারা গেছে।

তাদের এসব প্রচেষ্টার কাছে আমি ও আমার স্বামী নতি শিকার না করায় তারা এখন হত্যাকারীদের বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আমি জানতে পেরেছি যে, আসামিদের যে নামে আমরা মামলা দিয়েছি, সেটি তাদের ডাক নাম। তাদের আসল নাম অন্য।

মামলার ০১নং আসামি বেল্লাল মোল্লার আসল নাম হল বাহারুল মোল্লা। তার বাবার ডাক নাম মোস্তফা মোল্লা হলেও তার আসল নাম জাবেদ মোল্লা ওরফে জবা মোল্লা। ২নং আসামি ফারুক মাতুব্বরের বাবার নাম শাহ আলম মাতুব্বর। বেল্লাল মোল্লা ওরফে বাহারুল মোল্লা ও ফারুক মাতুব্বর সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। মামলায় বেল্লাল মোল্লার আসল নাম বাহারুল মোল্লা না থাকায় সে ওই আসল নাম বাহারুল মোল্লা নামে পাসপোর্ট করে বিদেশে পাড়ি জমানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমার ছেলের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক। সেই সঙ্গে আশা করছি আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের বর্তমান দুঃসহ জীবন থেকে মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত মায়ের মমতা নিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভানু মন্ডলের স্বামী কার্তিক চন্দ্র মন্ডল, বাবা হরিহর মন্ডল, বড় ছেলে বিজয় মন্ডল প্রমুখ।

এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বেল্লাল ওরফে বাহারুল মোল্লা ও তার মামা একই গ্রামের মোঃ শাহ আলম মাতুবাবরের ছেলে মোঃ ফারুক মাতুব্বর মিলে সৌরভকে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠে। এক পর্যায়ে তারা সৌরভের কণ্ঠনালী চেপে ধরে।

এতে সৌরভের ঘারে ও গলায় আঘাত লাগে। এরপর তারা সৌরভের মাথায় পোড়া মবিল ঢেলে দেয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত সৌরভ মন্ডল গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি জেনারেল ও কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

বিএ-১০/০৩-০৪ (আঞ্চলিক ডেস্ক)