সেই মাদরাসার কমিটি বিলুপ্ত, আটক ১৯

মাদরাসা ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের পর পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের পর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার কমিটি বিলুপ্ত করেছে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা)। শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. হোসাইন।

তিনি জানান, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. আহছান উল্লাহ স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে পূর্বের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি বিলুপ্ত করে আগামী দুই এক দিনের মধ্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি এডহক কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার সাবেক সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিকেএম এনামুল করিম বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি) সুজন চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সোনাগাজীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নীপিড়নের পর হত্যাকাণ্ডে মাদরাসার কমিটির একাধিক সদস্য জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে মাদরাসা পরিচলানা কমিটির সদস্য ও মামলার এজহারভুক্ত আসামি কাউন্সিলর মকসুদ আলমকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। একই কমিটির সহ-সভপাতি রুহুল আমিনকেও শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।

আলোচিত এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধে ওই অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠি আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন।

এদিকে রোববার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামিম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পিবিআই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের আটক করেছে।

এর আগে টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকেলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

বিএ-১৮/১৯-০৪ (আঞ্চলিক ডেস্ক)