আমাকে জানান, যত বড় প্রভাবশালী হোক আমি দেখব: এসপি হারুন

যে দলেরই হোক, যত বড় প্রভাবশালী হোক কোনো চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ।

তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসী, যারা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত, যারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের এক থাকতে হবে। অনেকে আপনাদের দুর্বলতার সুযোগে মাদক ব্যবসায় আনতে চাইবে। আপনারা তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন। তাদেরকে আটকে পুলিশে দেবেন। অনেক সন্ত্রাসী আছে আপনাদের ব্যবহার করে ফায়দা নিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকবেন। যারা আপনাদের ভালো কাজে ব্যবহার করতে চায়, যারা ভালো কাজে আপনাদের ডাকবে, তাদের পাশে থাকবেন।

বুধবার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া শহীদ মিনারে আয়োজিত মহান মে দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

শ্রমিকদের উদ্দেশ্য করে পুলিশ সুপার বলেন, পারিশ্রমিক কম দিচ্ছে এমন যদি মনে করেন তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করুন। কোনো ধরনের গুজবে কান দেবেন না। কেউ হয়তো ছড়াতে পারে, কোনো শ্রমিককে মেরে ফেলা হয়েছে, আটকে রাখা হয়েছে- এমন খবরে হু হু করে কেউ বের হবেন না। যদি মেরে ফেলে, আটকে রাখে তাহলে সরাসরি আমাদের জানান, সে যে দলেরই হোক, যত প্রভাবশালী হোক আমি দেখব।

বর্তমান সরকার শ্রমিকবান্ধব উল্লেখ করে এসপি হারুন অর রশিদ বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের নিয়ে ভাবেন বলেই শ্রমিকদেরকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। বেতন বাড়িয়েছেন। শ্রমিকদের ছেলে-মেয়েরা আগে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করতে পারেনি। বর্তমানে পারছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় তা সম্ভব হচ্ছে। আজকে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা শ্রমিকদের অবদান। আপনারা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন বলেই দেশ উন্নত।

শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনারা ধৈর্যহারা হবেন না। মালিকপক্ষ লাভবান হলে আপনাদেরকে ন্যায্য অধিকার দিতেই হবে। এজন্য আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনার মধ্য দিয়ে আপনাদের অধিকার আদায় করতে হবে। আমি বলবো, আমি আপনাদের পাশে আছি এবং থাকব।

এসপি হারুন অর রশিদ আরও বলেন, অন্যান্য জেলার থেকে নারায়ণগঞ্জের শ্রমিকদের অবস্থা অনেক ভালো। এখানকার শ্রমিক নেতারাও ভালো। এর কারণে সম্প্রতি গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ হলেও এখানে হয়নি। নারায়ণগঞ্জ শান্ত ছিল। আপনারা এমন শান্ত থাকেন। আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের স্বার্থ আদায় করুন। কোনো শ্রমিককে কেউ যদি মেরে ফেলে আমাদের জানান। আমরা ব্যবস্থা নেব। তাদেরকে গ্রেফতার করব।

পুলিশ সুপার বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনো সক্রিয়। তারাই চাচ্ছে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে। বোমা হামলা চালিয়ে বিভিন্ন স্থানে অনেক ভাইদের মেরেছে তারা। তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশ বিনিয়োগের স্থান নয় সেটি প্রমাণ করা। তাই তারা নানা সময় নানা ধরনের উসকানি দিয়ে আপনাদের বিপদে নিয়ে যেতে চাইবে।

তিনি বলেন, আপনারা শ্রমিক ভাইয়েরা যদি আমাদের সঙ্গে থাকেন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করব। মালিকপক্ষ যদি সহযোগিতা করেন তাহলে এই নারায়ণগঞ্জকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে পারব। সবার সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জকে শান্তির শহর হিসেবে গড়তে পারব।

মো. খোরশেদুল হক ভূঞার সভাপতিত্বে আলোচনা সভার আরও উপস্থিত ছিলেন- মোহাম্মদ জাহিদুল আলম, মোহাম্মদ হাতেম, মোরশেদ সরোয়ার ও কাউসার আহম্মেদ পলাশ প্রমুখ।

বিএ-১১/০১-০৫ (আঞ্চলিক ডেস্ক)