কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বৃষ্টিতে দাঁড় করিয়ে রেখে প্রতিমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা

পটুয়াখালীতে স্কুল শিক্ষার্থীদের বৃষ্টিতে দাঁড় করিয়ে রেখে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুককে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার সরকারি সফরে পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শনকালে উপজেলার হাঝিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অন্তত আড়াইশ শিশু শিক্ষার্থী বৃষ্টিতে ভিজে প্রতিমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানায়।

এর আগে প্রতিমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের একান্ত সচিব নুর আলমের স্বাক্ষরিত এক সফরসূচিতে জানা যায়, ১৪ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলের উপজেলাগুলোর নদীভাঙন এলাকায় পরিদর্শন করবেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার সফরসূচির অংশ হিসেবে দশমিনা উপজেলার হাঝিরহাট নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে তিনি।

কিন্তু এই পরিদর্শন উপলক্ষে ক্ষমতাসীন দলের একটি মহল হাঝিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অন্তত আড়াইশ শিশু ছাত্রছাত্রীকে রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখে।

এ সময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী সফর কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের রেহাই দেয়া হয়। এ ঘটনায় উপস্থিত এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তবে ক্ষমতাসীন দলের প্রতিমন্ত্রী হওয়ায় কেউ প্রকাশ্যে কথা বলছেন না। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিভাবকরাও।

এ প্রসঙ্গে হাছিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, মন্ত্রী মহোদয় আসবেন শুনে উৎসুক শিক্ষার্থীরা নিজেরাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের কেউ বাধ্য করেনি কিংবা বলেনি। তবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেলিম মিয়া মন্ত্রী মহোদয়ের প্রোগ্রামে আমাকে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে দশমিনা উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেলিম মিয়া বলেন, বৃষ্টিতে ভিজে শিশু শিক্ষার্থীরা কোনো ভিআইপিকে শুভেচ্ছা জানাবে তার কোনো বিধান নাই। তাছাড়া এরকম কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এটা প্রধান শিক্ষক অতিউৎসাহী হয়ে করেছেন।

এ ঘটনায় প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব ও ব্যক্তিগত সহকারী সফরসঙ্গী মো. হাদিস মীরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

তবে এ প্রসঙ্গে দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ জানান, আমি মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হই। এর আগে জানতাম না। মন্ত্রী মহোদয় আমার কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। তবে ওই স্কুলটি এমপিওভুক্ত না হওয়ার কারণে প্রধান শিক্ষক মন্ত্রীর সহানুভুতি পেতে এটা করতে পারেন বলে আমার ধারণা।

বিএ-১০/১৫-০৬ (আঞ্চলিক ডেস্ক)