‘বাবা ট্রেনের নিচে মায়ের গলা আটকে আছে’

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচালে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় কেড়ে নিয়েছে ৪ জনের প্রাণ। এদের মধ্যে ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন কুলাউড়ার মনোয়ারা পারভীন।

বড় মেয়ে ইসরাত মুন্নির জন্মদিন পালন শেষে সিলেট থেকে বাড়ি ফেরার পথে মারা যান কুলাউড়া পৌরসভার টিটিডিসি এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা। তাদের বাড়িতে এখন শোকের মাতম।

মনোয়ারার স্বামী আবদুল বারি জানান, সিলেট থেকে ট্রেনে উঠার পর তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। কিন্তু বরমচাল স্টেশন অতিক্রম করার সময় মেয়ে ফোন করে বলে, বাবা ট্রেনের নিচে মায়ের গলা আটকে আছে। মাকে বের করতে না পারলে তিনি মারা যাবেন, জলদি আসো বাবা।

মেয়ের ফোন পাওয়ার পর পাগলের মতো ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে মনোয়ারা বেগমের মস্তকবিহীন শরীর উদ্ধার করেন। শরীর থেকে মাথাটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। পরে মাথাটি উদ্ধার করা হয়।

মনোয়ারা পারভীনের স্বামী আবদুল বারি আরও জানান, ট্রেন ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে ছাড়ার পর সঙ্গে থাকা মেয়ে রিমির হাতে স্বর্ণের অলঙ্কারগুলো খুলে দেন।

মনোয়ারা পারভীন স্বামী ছাড়াও ২ মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। বড় মেয়ে ইসরাত মুন্নির জন্মদিন পালন করতে সিলেট শহরের পাঠানটুলা মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। রোববার ছিল তার জন্মদিন। মেয়ের জন্মদিন পালন করে বাড়ি ফেরার পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, তিন সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে রোববার রাতে সিলেট স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন। রাত ১২টার দিকে কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনের পাশে ঢাকাগামী উপবনের বগি ছিটকে পড়ে। এতে ৪ জন মারা যান।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিলেটের সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান জানান, হতাহতদের উদ্ধারে সিলেট সদর দফতরসহ মৌলভীবাজার জেলার দমকল বাহিনীর ১১টি ইউনিট উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয়।

বিএ-১৫/২৪-০৬ (আঞ্চলিক ডেস্ক, তথ্যসূত্র: যুগান্তর)