কাপড়ে বাঁধা রেললাইনের নাট-বল্ট!

প্রয়োজনীয় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলস্টেশন ও আশেপাশের তিনটি রেললাইনের অবস্থা নাজুক। কোথাও রেললাইনে নেই পাথর, আবার কোথাও রেললাইনের ফিশপ্লেটে নেই নাট-বল্ট। কোথাও আবার রেললাইনের ফিশপ্লেটের নড়বড়ে নাট-বল্ট কাপড় দিয়ে বাঁধা। ট্রেন চলাচলের সময় রেললাইন নড়াচড়া করে, হয় বিকট শব্দ। যাত্রীরা থাকেন আতঙ্কে।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্ম সীমানায় তিনটি রেললাইনের এই অবস্থা দেখা গেছে। স্থানীয়রা জানান, প্লাটফর্ম সীমানার বাইরে রেললাইনের অনেক স্থানে পর্যাপ্ত পাথর ও ফিশপ্লেটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নাট-বল্ট না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তিনটি রেলপথে প্রতিদিন আন্তঃনগর, লোকাল, কমিউটার ও মেইল ট্রেনসহ ৩২টি ট্রেন আসা-যাওয়া করে। স্টেশনের প্লাটফর্মে ট্রেন চলাচলের জন্য ৫টি পৃথক লাইন রয়েছে। যার দুটি লাইন পরিত্যক্ত।

গৌরীপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশন এলাকার চকপাড়া রেলগেট থেকে পশ্চিম ভালুকা পর্যন্ত এলাকায় তিনটি রেললাইনের অধিকাংশ জায়গা পাথরশূন্য। তিন রেললাইনের অর্ধশতাধিক ফিশপ্লেটে পর্যাপ্ত নাট-বল্ট নেই। প্রতিটি ফিশপ্লেটে ৪টি করে নাট-বল্ট থাকার কথা। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ সহকারি কার্যালয়ের সামনে ১ ও ২ নং লাইনের কয়েকটি স্থানে ফিশপ্লেটে কোথাও তিনটি আবার কোথাও দুটি পাওয়া গেছে। আউটার সিগন্যাল এলাকায় রেললাইনের সংযোগস্থলের হুক বের হয়ে গেছে।

স্টেশনের প্লাটফর্ম এলাকা সংলগ্ন ২নং রেললাইনের বিভিন্ন জায়গায় ফিশপ্লেটে পর্যাপ্ত নাট-বল্ট ছিলো না। নড়বড়ে হওয়ায় ২নং রেললাইনের এক জায়গায় ফিশপ্লেটের নাট-বল্ট পুরানো কাপড় দিয়ে বাঁধা। অপরদিকে স্টেশনের প্লাটফর্ম সংলগ্ন ৩নং রেললাইনের অবস্থা অন্য দুই রেললাইনের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে ভালো ছিলো। তবে ওই লাইনেও টিসিএম টেলিকম অফিসের সামনে ও রেলওয়ে কোয়ার্টার এলাকায় বেশ কয়েকটি জায়গায় রেললাইনের ফিশপ্লেটে ৪টির বদলে ৩টি করে নাট-বল্ট দেখা গেছে।

এ বিষয়ে গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ফকির বলেন, রেললাইনের ফিশপ্লেটের নাট-বল্ট, হুক, ক্লিপ পুরোনো হয়ে যাওয়ায় ট্রেন চলাচলের সময় খসে পড়ে। অনেক সময় আবার চুরিও হয়। এগুলো নিয়মিত মেরামত করা না হলে ট্রেন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুর রশিদ বলেন, ৩টি নাট-বল্ট থাকলে ট্রেন চলাচল করতে বড় রকমের ঝুঁকি থাকেনা। কিন্তু ২টি থাকলে ঝুঁকি থেকে যায়। এটা রেলওয়ের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগ দেখভাল করে।

গৌরীপুর রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের এই ত্রুটিগুলো সংস্কার ও রেললাইন মেরামত করার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

বিএ-১২/২৮-০৬ (আঞ্চলিক ডেস্ক)