বাগেরহাটে বাড়িতে ঢুকে আ.লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বাড়িতে ঢুকে সালাম সরদার (৪০) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। বুধবার ভোররাতে উপজেলার ছোট কুমারখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুপুরে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত সালাম সরদার ছোট কুমারখালী গ্রামের মৃত এরফান উদ্দিন সরদারের ছেলে এবং আওয়ামী লীগ কর্মী।
তিনি বিগত ২০০১ সালে জামায়াত-বিএনপি কর্মীদের হামলায় নিহত আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েত শিকদার হত্যা মামলার একজন সাক্ষী ছিলেন। ওই মামলাটি এখন বাগেরহাট জেলা ও দায়েরা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

রাজনৈতিক বিরোধে প্রতিপক্ষের লোকজন সালাম সরদারকে হত্যা করেছে বলে পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন।

নিহতের স্ত্রী রেক্সনা বেগম দাবি করেন, রাজনৈতিক শত্রুতার কারণে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিগত ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচন চলাকালে জামায়াত-বিএনপি কর্মীদের হাতে আওয়ামী লীগ কর্মী এনায়েত সিকদার নিহত হন। বাগেরহাট জেলা ও দায়েরা জজ আদালতে বিচারাধীন ওই মামলার সাক্ষী ছিলেন তার স্বামী সালাম সরদার। সে কারণেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, রাত ৩টার দিকে জামায়াত-বিএনপির ক্যাডার কবির মোল্লার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী লোহার রড, হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে দরজা জানালা-ভাঙচুর করে। প্রথমে লোকমান সরদারের ঘরে ঢুকে তাকে মারপিট শুরু করে। লোকমানের চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে তার ছোট ভাই সালাম সরদার ছুটে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খালে ফেলে দেয়।

এ সময়ে পরিবারের সদস্যরা ঘর থেকে বাইরে বের হলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করাসহ চারটি বসতবাড়িতে ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার সময় চারটি মিনি গ্যাস সিলিন্ডার, বেশ কিছু লাঠি ও ধারালো অস্ত্র বাড়িতে ফেলে রেখে যায়। পরে পরিবারের অন্য সদস্যরা গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সালাম সরদারকে মৃত ঘোষণা করেন।

হামলায় আহত ১০ জনের মধ্যে সাতজনকে গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- মোরেলগঞ্জে গড়ঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী শামীম সরদার (২৪), তার স্ত্রী জান্নাতি বেগম (১৯), বাবা ইসমাইল সরদার (৫০), রাকিব সরদার (১৪), মোজাম সরদার (৫০), লোকমান সরদার (৪০) ও মঞ্জু বেগম (৩০)। আহত অন্যদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মোরেলগঞ্জ সার্কেল) মো. রিয়াজুল ইসলাম জানান,হামলাকারীদের আটকে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান শুরু করেছে। এরই মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মন্টু মোল্লা ও জাফর শেখ নামে দুইজনকে আটক করেছে।

তিনি বলেন, নিহত সালাম সরদারের মরদেহের ময়নাতদন্ত দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। রাজনৈতিক ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিরোধের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বিএ-১০/৩১-০৭ (আঞ্চলিক ডেস্ক)