ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা সহপাঠী প্রেমিকা, স্বীকার করলেন কমিশনারের ছেলে

প্রেমিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে শিঞ্জন রায়কে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বুধবার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভিসি তারাপদ ভৌমিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সহপাঠীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত শিঞ্জন রায়কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সহপাঠী প্রেমিকাকে ধর্ষণ করে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা করার মামলায় গ্রেফতার শিঞ্জন রায়কে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়। একদিন রিমান্ড শেষে আদালতে নেয়া হলে খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদলতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক বলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে শিঞ্জন রায় তার প্রেমিকার সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাসের (লিভ-টুগেদার) কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া মামলার অনেক আলামত জব্দ করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের ভ্রমণের প্রমাণও পাওয়া গেছে।

ওসি আরও বলেন, যেসব বাড়িতে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেছে তারাই পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। শিঞ্জন রায় ও তার প্রেমিকাকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাসের জন্য ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন বাড়ির মালিকরা। এছাড়া শিঞ্জন রায়ের প্রেমিকার এক বান্ধবীর কাছ থেকে সম্প্রতি কুয়াকাটা ভ্রমণের কিছু ছবি জব্দ করে আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ।

তবে পুলিশ হেফাজতে সবকিছু স্বীকার করলেও আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়নি শিঞ্জন রায়। এ বিষয়ে ওসি মমতাজুল হক বলেন, এই মামলার যা প্রমাণাদি পাওয়া গেছে তাতে স্বীকারোক্তির কোনো প্রয়োজন নেই। সব থেকে বড় প্রমাণ শিঞ্জন রায়ের প্রেমিকা ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, যা দৃশ্যমান এবং শিঞ্জন রায়ও তা অস্বীকার করছে না।

এর আগে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় দায়ের হওয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলায় শিঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন পুলিশের পরিদর্শক মো. তৌহিদুর রহমান। শুনানি শেষে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বয়রা এলাকা থেকে শিঞ্জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় এক মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেছিল শিঞ্জন। ওই মেয়ের অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিঞ্জন তাকে ধর্ষণ করেছে। বর্তমানে তিনি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শিঞ্জন রায় খুলনার কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে।

ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, নগরীর সোনাডাঙ্গার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবিতে তিনি ও শিঞ্জন রায় পড়াশোনা করেন। এক বছর আগে শিঞ্জন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এরপর বিয়ে করার কথা বলে ভাড়া বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। বাসা ভাড়া নিয়ে ‘লিভ-টুগেদার’ করেছেন তারা। বর্তমানে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা তিনি।

শিঞ্জনকে অনত্র বিয়ে করানো হচ্ছে এমন খবর পেয়ে তিনি গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মুজগুন্নী আবাসিকের ১৬ নম্বর রোডে গিয়ে শিঞ্জন রায়ের দেখা পান। এ সময় বিয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তাকে সেখান থেকে ইজিবাইকে জোর করে তুলে দিতে গেলে স্থানীয়দের নজরে আসে। পরে থানা পুলিশে খবর দিলে তারা দুজনকেই সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় নিয়ে যায়। পরে শিঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন তিনি।

বিএ-০৮/২১-০৮ (আঞ্চলিক ডেস্ক)