ভাইকে ফাঁসাতেই স্ত্রীকে হত্যা করে আলাল

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের চার সন্তানের জননী সুফিয়া বেগম হত্যার রহস্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। বড় ভাইকে ফাঁসাতে তাকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেছে স্বামী আলাল উদ্দিন। একাজে তাকে সহায়তা করেছে ছেলে ও ভাতিজা।

ঘাতক স্বামী মো. আলাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সায়েদুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন ।

গত ১৩ অক্টোবর সকালে মির্জাপুর থানা পুলিশ উপজেলার আজগানা বিল থেকে চার সন্তানের জননী সুফিয়া বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

পুলিশ জানায়, আলাল উদ্দিনের সঙ্গে বড় ভাই মিনহাজের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ কারণে তিনি বড় ভাইকে ফাঁসানোর জন্য নিজের স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ জন্য নিজের বড় ছেলে মাদক বিক্রেতা শরীফুল ইসলাম ও স্ত্রীর বড় ভাইয় কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে স্বপন মিয়াকে টাকা ও জমির লোভ দেখান।

পরে গত ১২ অক্টোবর রাতে ছেলে শরীফুলকে দিয়ে সুফিয়া বেগমকে মাদক আনার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নেন আলাল উদ্দিন। সুফিয়া বাড়ির পাশে আজগানা বিলের কাছে পৌঁছালে সেখানে স্বামী আলাল উদ্দিনকে দেখে বলেন তুমি এখানে কেন? জবাবে আলাল উদ্দিন বলেন, দুইজনে বিলে গোসল করলে আমাদের রোগবালাই ভালো হবে।

এরপর স্বামীর সঙ্গে সরল বিশ্বাসে বিলের পানিতে নামেন সুফিয়া। এ সময় হাতে থাকা চাকু দিয়ে সুফিয়াকে হত্যার চেষ্টা করেন আলাল উদ্দিন। পরে শরীফুল ও স্বপনসহ তিনজন হাত-পা ধরে চুবিয়ে সুফিয়াকে হত্যা করে বাড়ি চলে যায়।

উল্লেখ্য, নিহত সুফিয়া ছেলে শরীফুল এবং ভাতিজা স্বপনের সঙ্গে মাদক ব্যবসা করতেন। তাকে হত্যার ঘটনায় ১৪ অক্টোবর ভাই মেছের আলী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় হত্যা মামলা করলে ওইদিন রাতেই স্বামী আলাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্য মতে বুধবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে ছেলে শরীফুল ও গাজীপুর থেকে ভাতিজা স্বপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

শুক্রবার শরীফুল ও স্বপনের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। মির্জাপুর থানার ওসি সায়েদুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।

বিএ-১৩/১৭-১০ (আঞ্চলিক ডেস্ক)