যশোরে স্ত্রীর পরকীয়ায় প্রাণ গেল প্রবাসীর

যশোরের শার্শায় স্ত্রীর পরকীয়ায় জীবন গেছে সামছুর সরদার (৫০) নামে এক প্রবাসী। তিনি উপজেলার উলাশী গ্রামের আরশাদ সরদারের ছেলে। এ ঘটনার পর তার স্ত্রী পারুল নিখোঁজ রয়েছেন। এলাকাবাসীর ধারণা তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন।

তারা জানান, সামছুর মালয়েশিয়া প্রবাসী। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ৭ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে ১৫ দিন আগে বাড়ি আসেন। এর দু‘দিন পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে নাভারণে বেসরকারি ক্লিনিকের এক চিকিৎসককে দেখান। চিকিৎসকের দেয়া প্রেসক্রিপশনে পিরিটন নামে একটি কাশির সিরাপ ছিল। প্রথমে সেই সিরাপ সেবনে কোনো সমস্যা না হলেও দ্বিতীয়বার সেবন করলেই বমি ও পেটে জ্বালাপোড়াা শুরু হয়। তখন ছেলে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, বিষক্রিয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজে (খুমেক) ভর্তির পরামর্শ দেন। সেখানে ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান সামছুর।

বাবা আরশাদ আলী অভিযোগ করেন, ছেলের বউ পারুল ও তার প্রেমিক রুবেল হোসেন মিলে কৌশলে সামছুরকে বিষপান করিয়ে হত্যা করেছে। সামছুর মালয়েশিয়া থাকাকালীন পারুল ওই এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী রুবেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পারুলকে এ থেকে বিরত থাকতে বললে রুবেল ও তার ক্যাডাররা বেশ কয়েকবার হুমকি-ধামকি দেয়। ফলে তারা আর বিষয়টি কাউকে জানতে সাহস পাননি।

সামছুরের মা শাহিদা খাতুন অভিযোগ করেন, রুবেলের পরামর্শে পারুল কাশির সিরাপের সঙ্গে ঘাস মারা বিষ মিশিয়ে দিয়েছে। তারা দু‘জনে ষড়যন্ত্র করে সামছুরকে মেরে ফেলেছে। আমরা তাদের অবৈধ সম্পর্কের কথা জেনেও ভয়ে কিছুই করতে পারেনি। রুবেল অনেক ক্ষমতাধর, তাই ভয়ে নিরব ছিলাম।

নিহতের একমাত্র মেয়ে তিন্নির অভিযোগ, তার মাকে রুবেল শিখিয়ে দিয়েছিল কীভাবে বাবাকে মেরে ফেলা যায়। তার কথা শুনে মা সিরাপের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে বাবাকে খাইয়ে মেরে ফেলেছে। তাই বাবা হত্যার বিচার চায় সে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পারুলের প্রেমিক ও মাদক ব্যবসায়ী মির্জাপুর গ্রামের রুবেল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পারুলের সঙ্গে আগে সম্পর্ক ছিল। তা সবাই জানে। কিন্তু এখন কোনো সম্পর্ক নেই। আর এ ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততার প্রশ্নই ওঠে না’।

শার্শা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এ ঘটনায় খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল ঘুরে ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, বিষপ্রয়োগ করে সামছুরকে তার স্ত্রী পারুলই হত্যা করেছে।

বিএ-০৯/২৯-১১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)