যশোরে গৃহকর্মীকে পেটালেন শিক্ষিকার স্বামী

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষিকার স্বামীর হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের বাড়ির গৃহকর্মী। শনিবার যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবনের পাশে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী সখিনা খাতুন যশোরের চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে।

নির্যাতনকারী মাজহারুল ইসলাম পূবালী ব্যাংক যশোর শাখার কর্মকর্তা ও যবিপ্রবি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক শাহানাজ আক্তারের স্বামী।

যবিপ্রবি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক শাহানাজ আক্তারের দাবি, ‘ওই গৃহকর্মী তার বাচ্চাকে মেরে চলে যাচ্ছিল। এ সময় আমার স্বামী ক্ষুব্ধ হয়ে কাঠি দিয়ে দুটি আঘাত করেছে। এতে আহত হওয়ার কথা নয়। এরপর ওই মহিলা আমার ঘরের দরজায় লাথি মেরে গালিগালাজ করে বাইরে চলে যায়। এরপর এক, দেড় ঘণ্টা সে বাইরে ছিল। পরে ভ্যানে করে এসে চিকিৎসা নেয়ার কথা বলেছে।

সখিনা খাতুন অভিযোগ করেন, শনিবার সকালে মাজহারুল তার ওপর চড়াও হয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।

তিনি জানান, দুই সন্তানের জননী সখিনার স্বামী মৃত মাহামুদুল হাসান মারা যাবার পর অস্বচ্ছলতার কারণে প্রায় দুই বছর ধরে তিনি ওই শিক্ষকের বাসায় কাজ করতেন।

আহত সখিনা খাতুন আরও বলেন, ‘মাজহারুল ইসলাম প্রায়ই আমাকে বকাঝকা ও গালিগালাজ করতেন। এক পর্যায়ে আমি কাজ ছেড়ে দিব বলে সিদ্ধান্ত নিই। যার প্রেক্ষিতে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আমাকে জখম করা হয়। তবে সখিনা শিক্ষিকা শাহানাজ আক্তার এ বিষয়ের জন্য দায়ী না।’

সখিনার পিতা আবুল হোসেন অভিযোগ করেন, মারধরের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক ৩০ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসার নামে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, সখিনাকে খুবই খারাপভাবে আঘাত করা হয়েছে। লাঠির আঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট বেঁধেছে এবং টিস্যু খুবই খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে ডরমেটরি ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। আর যদি বাদীপক্ষ কোনো মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।

যবিপ্রবি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক শাহানাজ আক্তার বলেন, ‘আঘাতের চিহ্নটি সাজানো। ওই নারীর যদি মান-সম্মান থাকতো তাহলে মিডিয়ার সামনে কাপড় খুলে দেখাতে পারতো না। এখন সে দেড়লাখ টাকা দাবি করছে এবং ব্লাক-মেইল করার চেষ্টা করছে।’

বিএ-০৮/০১-১২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)