বিএনপি সভাপতি এখন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক!

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চরপুটিমারি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি থেকে আওয়ামী লীগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন মো. নেদা মণ্ডল নামে এক নেতা।

বিএনপির সভাপতি রাতারাতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে বইছে সমালোচনার ঝড়।

ইসলামপুর উপজেলার চরপুটিমারি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. মজদুল আকন্দ স্বাক্ষরিত অভিযোগে জানা গেছে, মো. নেদা মণ্ডল ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি পদে এখনও বহাল আছেন। বিএনপির সভাপতির পদে থেকেই গত ২৯ নভেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের শাখা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে মো. নেদা মণ্ডল ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হন।

কাউন্সিল শেষে বিএনপির সভাপতি নেদা মণ্ডলের নাম ঘোষণা করা হয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে। কাউন্সিলে দুর্নীতির মাধ্যমে এমনটি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘটনাটি তদন্ত করে দেখতে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা মো. মজদুল আকন্দ জানান, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে আওয়ামী পরিবারগুলোর ওপর পাশবিক নির্যাতনসহ নানাভাবে হয়রানি করা নেদা মণ্ডলকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। যারা জেলজুলুম হুলিয়া মাথায় নিয়ে পালিয়ে থেকেছে, নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছে এ সব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দেয়া হয়েছে। নতুন কমিটিতে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের স্থান দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সভাপতি থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া নেদা মণ্ডল বলেন, এ সব ছোটখাটো বিষয়ে নিউজ করে কী করবেন। আওয়ামী লীগ বড় দল। বর্তমানে ক্ষমতায় আছে। আমি শুরু থেকেই বিএনপিতে ছিলাম। ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলাম। এক বছর আগে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করি। এখন আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

দলে অনুপ্রবেশকারী নেদা মণ্ডল কীভাবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন- এমন প্রশ্নে চরপুটিমারি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান সুরুজ মাস্টার জানান, নেদা মণ্ডল খুব ভালো লোক। সৎ লোক। তাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়ায় আওয়ামী লীগ চাঙ্গা হয়েছে। আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। সে আমাদের সঙ্গেই থাকে। তাকে ডাকলেই পাওয়া যায়। আমি বা আমরা কোনো টাকার বিনিময়ে কমিটি অনুমোদন করিনি।

তিনি বলেন, তিনি বিএনপিতে ছিলেন শুরু থেকেই। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই মাস আগে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ভোট বৃদ্ধির জন্যই এই পদে তাকে চেয়েছিলাম। এখন আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করেন।

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকীবিল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র বিরোধী। অন্য কোনো দল থেকে এসে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ সহসাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জেলা আওয়ামী লীগের পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বিএ-১৭/০৫-১২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)