দেশের মর্যাদা বৃদ্ধিতে নৌবাহিনীকে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের দেশের সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য সততা, নিষ্ঠা এবং একাগ্রতার সঙ্গে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আপনারা যারা কঠোর প্রশিক্ষণের পর কাজে যোগ দেবেন তাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, আত্মত্যাগের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে সততা, নিষ্ঠা এবং একাগ্রতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আপনারা দেশের সম্মান আরো উজ্জ্বল করবেন।

রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী একাডেমিতে ‘মিডশিপম্যান-২০১৭ আলফা’ এবং ‘ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার-২০১৯ ব্রাভো’ ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বিদায়ী ক্যাডেটদের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ, ২০১৯ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী তাদের শপথের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আজ আপনারা শপথ গ্রহণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নৌ দিবস উপলক্ষে ১৯৭৪ সালের ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে জাতির পিতার প্রদত্ত ভাষণের উল্লেখযোগ্য অংশ উদ্ধৃত করেন।

‘আমার দেশের মানুষ আমার কথা শুনেছিল বলেই আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আজ তোমরা যদি আমার কথা শোনো, যদি শৃঙ্খলা বজায় রাখো, যদি উপরওয়ালার হুকুম মানো, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াও এবং সৎ পথে থাকো, ইনশাআল্লাহ, দেখবে সোনার বাংলা সোনার বাংলাই হবে।’

আমাদের সমুদ্র সীমায় থাকা সম্পদের প্রসঙ্গ টেনে একে কাজে লাগানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের সমুদ্রসীমায় রয়েছে অপার সম্ভাবনা। এই সমুদ্র সম্পদকে দেশের অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে হবে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী কোর্স সম্পন্ন করে কমিশন লাভকারী ৭২ জন নবীন কর্মকর্তার মধ্য থেকে কৃতিত্বের অধিকারী কর্মকর্তাদের মাঝে বিভিন্ন পুরস্কার বিতরণ করেন। পাসিং আউট কর্মকর্তাদের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০১৭/এ ব্যাচের ৬১ জন মিডশিপম্যান এবং ২০১৯/বি ব্যাচের ১১ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার রয়েছেন। যার মধ্যে ৭ জন মহিলা এবং ২ জন মালদ্বীপের কর্মকর্তা রয়েছেন।

মিডশিপম্যান ২০১৭/এ ব্যাচের রাইয়ান রহমান সব বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন করে সেরা চৌকষ মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।

এছাড়া মিডশিপম্যান মো. সাইদিস সাকলাইন মিরান প্রশিক্ষণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ’ স্বর্ণ পদক’ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০১৯/বি ব্যাচ থেকে অ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট মো. কামরুজ্জামান শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীর শ্রেষ্ঠ রহুল আমিন স্বর্ণপদক’ লাভ করেন।

প্রধানমন্ত্রী নবীন কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দেশ মাতৃকার নিরাপত্তা রক্ষার্থে আপনারাই হবেন এই নৌবাহিনীর ভবিষ্যত দিক নির্দেশক।

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মাদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, পিএমও সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএ-১৪/২২-১২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)