তিন ছেলের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ মায়ের অভিযোগ

পিরোজপুরে এক বৃদ্ধ মায়ের জমি প্রতারণা করে নিজেদের নামে লিখে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে আপন তিন ছেলের বিরুদ্ধে।

পিরোজপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মরিচাল এলাকায় বৃদ্ধ মা সামসুন্নাহার বেগম (৮৫) জানান, তার তিন ছেলে হাবিবুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন ও মজিবুর রহমানের তাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেন। পরে এ ঘটনায় মা সামসুন্নাহার বেগম বাদী হয়ে তিন ছেলের বিরুদ্ধে পিরোজপুর আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

সামসুন্নাহার বেগম অভিযোগ করে জানান, তার স্বামী আকবর আলী শেখ মারা যাবার আগে পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মরিচাল এলাকায় ৪ ছেলের নামে ১৮ শতাংশ ও তার নামে ১০ শতাংশ জমি লিখে দিয়ে যান। এরপর তিনি তার ৪ ছেলের মাঝে ৭ শতাংশ জমি মৌখিক ভাগ করে দেন। সেই ভাগ পাওয়া জমির উপর তার ছোট ছেলে মতিউর রহমান ২০১৭ সালে একটি বাড়ি নির্মাণ শুরু করে।

পরে ২০২১ সালে সেই নির্মাণাধীন বাড়িতে ছাদ দেওয়ার পরে তার অপর তিন ছেলে সেই জমি তাদের বলে দাবি করে। বিষয়টি তিনি তার অপর তিন ছেলে হাবিবুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন ও মজিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তারা তাকে জানান, এই জমি নাকি তিনি তাদের নামে লিখে দিয়েছেন।

সামসুন্নাহার বেগম আরও অভিযোগ করে জানান, তিনি লেখাপড়া জানলেও তার তিন ছেলে তার অসুস্থতার সুযোগে টিপ সই নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে একটি দলিল করে তার নামের জমি লিখে নিয়েছে। এখন মরিচাল এলাকায় তিনি তার বাড়িতে থাকতে চাইলে তাকে মারধর করে বের করে দেয় ছেলে ও বৌয়েরা। তাই তার জমি ফেরত পাওয়ার জন্য তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

এ বিষয়ে ছোট ছেলে মতিউর রহমান জানান, পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া জমির উপর ২০১৭ সালে পৌরসভা থেকে অনুমতি নিয়ে বাড়ির প্লান পাশ করে তিনি একটি বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরে ২০২১ সালে সেই বাড়ির ছাদ দেওয়া হয়। করোনার কারণে বাড়ির অন্য কাজ না করতে পারায় এ বছরের মার্চ মাসে পুনরায় বাড়ির কাজ শুরু করলে তার অপর তিন ভাই এসে সেই কাজে বাধা দেন এবং জানান যে তাদের মা এই জমি তাদের নামে লিখে দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে তিনি তার মায়ের কাছে জানতে চাইলে তার মা জানান, তিনি কোনো জমি কারও নামে লিখে দেননি এবং এ বিষয়ে কিছু জানেন না। এ সময় তার তিন ভাই একটি দলিল দেখান যাতে তাদের মা টিপ সই দিয়ে একটি দলিল তাদের নামে লিখে দিয়েছেন। কিন্তু তাদের মা জানান, তিনি তো লিখতে জানেন কেন টিপসই দিবেন।

প্রকৃতপক্ষে মায়ের অসুস্থতার সময় তারা মায়ের সঙ্গে জালিয়াতি করে টিপসই নিয়ে একটি দলিল করেছে। বিয়য়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য পৌরসভার কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও স্থানীয় মজনু তালুকদার সহ কয়েকজন বসলেও বিষয়টি মীমাংসা হয়নি।

এদিকে এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানের মেয়ে রতনা আক্তার জানান, তার দাদী সামসুন্নাহার বেগম নিজের ইচ্ছায়ই জমি তার বাবা ও অপর দুই চাচার নামে লিখে দিয়েছেন। জোর করে জমি লিখে নেননি বলে দাবি করেছেন তিনি।

এসএইচ-২৬/১৩/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)