কুমিল্লার নগরপিতা কে এই রিফাত?

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে দুবারের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নগরপিতা নির্বাচিত হয়েছেন আরফানুল হক রিফাত। মাত্র ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে মনিরুল হক সাক্কুর মতো শক্ত প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।

বুধবার রাতে ভোটগণনা শেষে ১০৫টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে নৌকার এ মাঝিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

কুসিক নির্বাচনে ১০৫টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঘুড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট। মাত্র ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন সাক্কু।

এদিন বিকেল ৪টার পর ভোটগণনা শুরু হলে কিছুক্ষণ বাদেই একে একে আসতে থাকে ফলাফল। ফল ঘোষণার শুরুতে দেখা যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপুল ভোটে এগিয়ে আছেন। এমনকি শেষ ১০১টি কেন্দ্রের ফলাফলেও কিছুটা চাপে পড়েছিল রিফাতের ফলাফল। তবে শেষ হাসিটা রিফাতই হাসলেন।

সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১০৫টি কেন্দ্রের ফলাফলে নতুন নগরপিতা পেল কুমিল্লাবাসী। সাক্কুর হ্যাটট্রিক আটকে নিজেকে জানান দিলেন তিনি। কিন্তু কে এ রিফাত। জেনে নেওয়া যাক তার সম্পর্কে বিস্তারিত।

আরফানুল হক রিফাত কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৭৪ সালে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি এবং স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। কুমিল্লা জিলা স্কুলে পড়াকালীন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী হিসেবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন রিফাত। ১৯৮০ সালে শহর ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৮১ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের প্যানেলে তিনি বহিঃক্রীড়া ও ব্যায়ামাগার সম্পাদক নির্বাচিত হন সদ্য বিজয়ী এই নগরপিতা।

ওই সময় কলেজ ছাত্র সংসদে প্রথম জাতির পিতার ছবি উত্তোলন করেন রিফাত। একই বছরে জামায়াত শিবিরের আক্রমণের শিকারও হন তিনি। ওই সময় তার দুই হাত এবং দুই পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। ১৯৮৩-৮৫ সাল পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে চিকিৎসা নেন। এ সময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এরশাদবিরোধী আন্দোলনেও। ১৯৯৬ সালে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য পদ লাভ করেন নৌকার এ কাণ্ডারি। পরে তিনি কুমিল্লা জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ লাভ করেন তিনি।

এ ছাড়া গত ১২ বছর ধরে কুমিল্লা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কুমিল্লা ক্লাবের দুবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন কুমিল্লার এই নগরপিতা।

এসএইচ-১২/১৫/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)