চুরির অপবাদে কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

চুরির অপবাদে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় ১৪ বছরের এক কিশোরকে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় মোবাইলে ওই দৃশ্য ধারণ করে উল্লাস করা হয়।

এ ঘটনায় গত ২৭ জুলাই উসমান মোল্যাডাঙ্গী গ্রামের আমজাদ মোল্যা (৪০), শাজাহান মোল্যা (৫০), ইউসুফ বেপারি (৬০), কাইয়ুম মোল্যা, নজরুল ইসলাম, মতিয়ার মোল্যা, ইউনুস মোল্যাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৭ জনকে আসামি করে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী কিশোরের মা আসমা বেগম (৪২)।

এর আগে সদরপুর উপজেলার ভাসানচর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় গত ১৭ জুলাই (রোববার) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সদরপুর উপজেলার ভাসানচর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় গত ১৭ জুলাই (রোববার) রাতে চুরির অভিযোগে রিয়াজকে আটক করা হয়। পরে রিয়াজকে ধরে নতুন বাজার এলাকায় নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে সবার সামনে মারধর করে আসামিরা। চুরির অভিযোগে রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তার ওপর চলে অমানুষিক নির্যাতন।

শনিবার শিশুটির মা আসমা বেগম জানান, আহত রিয়াজকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও তার চিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়। সদরপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগীর পরিবার।

শিশুটির মা আসমা বেগম আরও বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে নদীভাঙনের শিকার হয়ে তারা টিলাডাঙ্গী গ্রামে জমি কিনে নতুন বসত গড়েন। তার স্বামী ও বড় ছেলে প্রবাসী। টিলাডাঙ্গীতে জমি কিনে বাড়ি করার পর থেকেই স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী মহল তাদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন করে আসছে। কিন্তু লোকবল না থাকায় তারা প্রতিবাদ করতে পারেন না। শত্রুতা করেই তার ছেলেকে এভাবে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন তারা গ্রামে বসবাস করতেই ভয় পাচ্ছেন। তার ছেলে তো ঘরের বাইরেই বের হতে পারছে না।

এ ব্যাপারে ভাষাণচর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান কাওসার শেখ বলেন, ‘ওই গ্রামে ইদানীং শ্যালো মেশিন চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। পরে ওই রাতে চুরির সন্দেহে ছেলেটিকে মারধর করা হয়। তবে রাতে ছেলেটিকে আটক করার খবর পেয়ে আমি তাদের মারধর করতে নিষেধ করেছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি চুরির সঙ্গে রিয়াজের সম্পৃক্ততা নেই। তাই পরে অবশ্য তার মাকে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা রাজি হননি। কোর্টে তারা মামলা করেছেন। পরে কোর্ট মামলাটি সিবিআইকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’

এ ব্যাপারে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, এমন কোনো ঘটনার খবর কেউ আমাকে জানাননি। কেউ মামলা করার জন্যও আসেননি। এ রকম অভিযোগ নিয়ে এলে অবশ্যই তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হতো।’

এসএইচ-১৪/৩০/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)