চট্টগ্রাম ১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া দ্বন্দ্বে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, ওই ব্যক্তিকে স্থানীয় নেতা হত্যার হুমকি দেয়ায় ভয়ে পালিয়েছেন তিনি। রোববার চট্টগ্রাম নগরীর আমবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই দম্পতি হলেন- নগরীর আমবাগান এলাকার গোলাপ মিয়া (৫১) ও রুবি বেগম (৩৯)। গোলাপ ডেকোরেটরের দোকানে কাজ করেন। আর রুবি বেগম গৃহকর্মীর কাজ করেন।
স্থানীয়রা জানান, রোববার সকালে নৌকা সমর্থিত কয়েকজন গিয়ে স্থানীয় অন্যান্য নারীদের সঙ্গে রুবি বেগমকেও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে টাইগারপাস বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে ডেকে নিয়ে যান। ভোট দেয়া শেষে রুবি দুপুরে বাড়ি ফিরলে তার স্বামীর সঙ্গে এ নিয়ে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে রাতে গোলাপ আমবাগান এলাকা ছেড়ে নিজ গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর উদ্দেশে রওনা দেন।
গোলাপ মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমকে জানান, ভোট না দেয়ার জন্য সকালে আমি তাকে (স্ত্রীকে) বারণ করেছিলাম। কিন্তু সে আমার কোনো কথা শোনেনি। সে ভোট দিতে চলে গিয়েছিল। আমার কথা না শোনায় খুব খারাপ লেগেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সে (স্ত্রী) বলেছে, তাকে নাকি জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে আমি তাকে বলে দিয়েছি, তোমার সংসার নিয়ে তুমি থাকো। আমার দু-চোখ যেদিকে যায় সেদিকে চলে যাব। পরে আমি বাসা ছেড়ে চলে আসি।’
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ওই ঘটনা আমার জানা নেই। আর হুমকি বা এ ধরনের ঘটনার ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগও করেনি।
এদিকে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু। রোববার রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম থেকে ওই ফল ঘোষণা করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
নৌকা প্রতীক নিয়ে মহিউদ্দিন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৯২৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী মো. সামসুল আলম লাঙ্গল প্রতীকে এক হাজার ৫৭২ ভোট পান।
এর আগে রোববার সকাল ৮টায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টায়। ভোট গণনা শেষে মহিউদ্দিন বাচ্চুকে বেসরকারিভাবে জয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
গত ২ জুন ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীন। তিনি দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। এই আসনে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পরপর পাঁচবার সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এসএইচ-০২/৩১/২৩ (আঞ্চলিক ডেস্ক)