নারী ও সম্পদের ভোগ-বিলাস সম্পর্কে কুরআনের নির্দেশনা

নারী ও সম্পদের

দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ী জীবনে মানুষের জন্য আল্লাহ তাআলা তামাম মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের প্রয়োজন মোতাবেক সব কিছুই তিনি সৃষ্টি করেছেন। যাতে মানুষ তার প্রকৃত মালিক আল্লাহ তাআলার দাসত্ব করে।

ভালো-মন্দ, হালাল-হারাম আনন্দ-বিনোদন, প্রবৃত্তির দুর্বলতা, আকর্ষণ সব কিছুই তিনি সৃষ্টি করেছেন। আর সে সব মানুষের অন্তরে ঢেলে দিয়েছেন। পাশাপাশি জীবন পরিচালনার জন্য নাজিল করেছেন পবিত্র কুরআনুল কারিম। জানিয়ে দিয়েছেন কিভাবে পরিচালিত করতে হবে দুনিয়ার এ ক্ষনস্থায়ী জীবন।

যারা কুরআন অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে বা করছে, তারা পরকালেই নয় বরং দুনিয়াতেও সফল। তবে মানুষের ক্ষনস্থায়ী এ জীবনে সবচেয়ে বেশি আসক্তি বা বেশি চাহিদা কোন জিনিসের প্রতি সে কথা আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করেছেন। যারা কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী এ সব জিনিসের ব্যবহার বা ভোগ করবে, তারাই সফলকাম। আল্লাহ তাআলা বলেন-

আয়াতের অনুবাদ

আয়াতের পরিচয় ও নাজিলের কারণ

সুরা আল-ইমরানের ১৪নং আয়াতে দুনিয়ায় মানুষের চোখে ও মনে সবচেয়ে যে জিনিসগুলোর চাহিদা বেশি, সে বর্ণনা ওঠে এসেছে। আরো জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, এ সব ক্ষনস্থায়ী জীবনের জন্য। পরকালে প্রকৃত সুখ রয়েছে মহান আল্লাহর কাছে।

দনিযার সর্বোৎকৃষ্ট সম্পদ

এ কথা সর্বজনবিদিত যে, মানুষের সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা ও টান নারীর প্রতি। আর নারী যদি পবিত্র চরিত্রের অধিকারী হয় এবং তার মেহনত যদি কল্যাণ ও উত্তম বংশ বিস্তারের জন্য হয় তবে সে নারী দুনিয়ার সেরা সম্পদ।

আল্লাহ তাআলা স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মধ্যে নারী, সন্তান-সন্তুতি, সোনা-রূপা, দামি দামি সম্পদ, শষ্য উৎপাদনকারী ভূমির প্রতি ভালোবাসা বা আকর্ষন দিয়েই তৈরি করেছেন।

আবার এ কথাও জানিয়ে দিয়েছেন যে, দুনিয়ার এ সব কিছু ক্ষনস্থায়ী। পরকালে চিরস্থায়ী সুখ-শান্তি আল্লাহর কাছে।

সুতরাং দুনিয়াতে যারা কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী দাম্পত্য জীবন, সন্তান-সন্ততি, ধন-সম্পদ ও জায়গা-জমির যথাযথ হক আদায় করে ভোগ করবে। পরকালে এসব সামগ্রীও মানুষের চূড়ান্ত উপকারে আসবে।

এ কারণেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদেরকে দুনিয়ার সর্বোত্তম সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। প্রিয়নবি বলেন-

‘নেককার স্ত্রী; যে স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্বামীর সম্পদ এবং নিজের সতীত্ব রক্ষা করে সে স্ত্রী দুনিয়ার সর্বোৎকৃষ্ট সম্পদ।

দুনিয়ায় নারী, সন্তান-সন্তুতি, ধন-সম্পদ, বিশাল অট্রালিকা, ফুলে-ফলে সুশোভিত নয়নাভিরাম জায়গা-জমি যেন মানবজাতিকে কুরআন-সুন্নাহর বিধান থেকে দূরে সরিয়ে না দেয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ এগুলো দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ী জীবনের ভোগবিলাস মাত্র।

সুতরাং দুনিয়ায় নারী ও সম্পদের ভোগ বিলাস থেকে বেঁচে থেকে আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবনকে ঢেলে সাজাতে হবে। তবেই দুনিয়া ও পরকালীন জীবনে সফলতা আসবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনুল কারিমের এ আয়াত থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনকে কুরআন-সুন্নাহর রঙে সাজানোর তাওফিক দান করুন। দুনিয়ায় নারী ও সম্পদের লোভ এবং ভোগ বিলাস থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরএম-১০/০৮/০১ (ধর্ম ডেস্ক)