তাওবা করবেন কেন?

তাওবা করবেন

বান্দা তাওবা আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয়। যে ব্যক্তি অন্যায় করে আর তাওবা করে আল্লাহ তাআলা তাকে অনেক ভালোবাসেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসই এর প্রমাণ। কেননা তাওবা শব্দের অর্থ হলো- ফিরে আসা।

যখন তাওবা শব্দটির সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে হয় তখন তার তাৎপর্য দাঁড়ায়, বান্দার কৃত অন্যায়ের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া, সে অন্যায় সম্পূর্ণরূপে বর্জন করে। ভবিষ্যতে এমন অন্যায় না করার দৃঢ়-সংকল্প করে। এমন দৃঢ়-সংকল্প করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার নামই হচ্ছে ‘তাওবা’।

ইমাম রাজি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, বান্দার উচিত সর্বদা আল্লাহর দরবারে তাওবা করা। তিনি কয়েকটি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়েছেন-

> হজরত আবু আইউব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এ কথা শুনেছি, যা তোমাদের নিকট থেকে গোপন রেখেছিলাম। তিনি বলেছেন, যদি তোমরা গোনাহ করে আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তিগফার না করতে, তবে আল্লাহ এমন এক মাখলুক সৃষ্টি করতেন, যারা গোনাহ করে এবং তার কাছে তাওবা করতো; আর তখন আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করতেন। (মুসলিম)

> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে তাওবা করতে থাক। কেননা আমি নিজে দৈনিক ১০০ বার তাওবা করি।

> হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো- যে গোনাহ করে এবং তাওবা করে, আবার পুনরায় গোনাহ করে। আবার তাওবা করে আবার গোনাহ করে। আবার গোনাহের কাজে মশগুল হয় এবং আবার তাওবা-ইস্তিগফার করে। (জানতে চাওয়া হয়) এ রূপ করতে থাকা ব্যক্তির কী অবস্থা হবে?

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, তার কর্তব্য হলো সর্বদা তাওবা-ইস্তিগফার করতে থাকা। কেননা তাওবা-ইস্তিগফার অব্যাহত থাকলে শয়তান ব্যর্থ হয়ে যায়। শয়তান বলে, এ ব্যক্তিকে গোনাহর কাজে সর্বদা মশগুল রাখতে আমি অক্ষম।

সুতরাং বুঝা যায় যে, বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওবা-ইস্তিগফারের সুযোগদান এক মহা নিয়ামাত স্বরূপ। তাঁর এ নিয়ামাতের শুকরিয়া আদায় করা বিশ্ব মুসলিমের জন্য একান্ত অপরিহার্য বিষয়।

হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি একই মজলিশে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইসতেগফার একশত বার গণনা করতাম। তিনি বলতেন-

উচ্চারণ- ‘রাব্বিগফিরলি, ওয়া তুব আলাইয়্যা, ইন্নাকা আংতাত তাওয়াবুল গাফুর।’

অর্থ : পরওয়াদেগার! তুমি আমাকে মাফ কর এবং আমার তাওবা কবুল কর। কেননা তুমি হলে তাওবা কবুলকারী এবং ক্ষমাকারী। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ ও মিশকাত)

মুসলিম উম্মাহর ‍উচিত মহান আল্লাহর দরবারে প্রতিদিন তাওবা-ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রাথনা করা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের উপর যথাযথ আমল করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরএম-২২/১৬/০১ (ধর্ম ডেস্ক)