অন্যায় অপরাধ থেকে মুক্ত থাকার অন্যতম নেয়ামত হলো সবর ও সালাত। এটা মহান আল্লাহর নির্দেশ। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ইরশাদ করেন-
‘তোমরা আল্লাহর কাছে ধৈর্য এবং নামাজের মাধ্যমে সাহায্য কর। আর নিশ্চয় তা বিনয়ীরা ছাড়া অন্যদের ওপর কঠিন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৫)
আয়াতে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, মানুষের জীবন সংগ্রামে সফলতা লাভের অন্যতম গুণ দুটি। আর এ গুণ দু’টিই মুমিন মুসলমানের সেরা গুণ। আর তাহলো-
– সবর বা ধৈর্য।
– নামাজ।
বাস্তব জীবনে সবর বা ধৈর্য অবলম্বন করা অনেক তিক্ত ও বিরক্তিকর বিষয়। কিন্তু সবর বা ধৈর্যের ফল অনেক মধুময়। আর এ কারণেই কুরআনের অনেক আয়াতে মুমিন মুসলমানকে সবর অবলম্বনের উপদেশ দেয়া হয়েছে।
ধৈর্য মানুষের সেরা গুণই নয় বরং তা বান্দার জন্য মহান আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতকে ধৈর্যের সুসংবাদ এভাবে দেন যে-
‘দুনিয়াতে যদি কোনো ব্যক্তিকে ধৈর্যের গুণ দান করা হয়, তবে মনে করতে হবে যে, তাকে সবচেয়ে উত্তম এবং অধিকতর নেয়ামত দান করা হয়েছে। কেননা ধৈর্যের মূল বিষয় হলো-
– নিজেকে অন্যায় কাজ থেকে তথা আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতা থেকে বিরত রাখা।
– বিপদে ধৈর্য ধরা। অথবা
– প্রাপ্ত নেয়ামাতকে স্মরণ করে বর্তমান বিপদে ধৈর্য ধরা।
কেননা জীবন সাধনার সার্থকতায় এ সবরের প্রয়োজন অত্যন্ত বেশি।’
তাইতো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাগণ কঠিন বিপদেও ধৈর্য ধরতেন। বিপদ থেকে মুক্ত থাকতে নামাজের মাধ্যমে ধৈর্য ধরতেন।
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু এক সফরে ছিলেন। এমন সময় তিনি ভাইয়ের মৃত্যু পান। এ সংবাদ শুনে প্রথমে তিনি- ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করলেন। তারপর উট থামিয়ে পথের ধারেই নামাজ পড়া শুরু করলেন এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত নামাজে অতিবাহিত করলেন।’
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসে প্রমাণিত যে, নিজেকে অন্যায় থকে মুক্ত রাখার অন্যতম গুণ হলো ধৈর্য ধরা। আর যে ব্যক্তি ধৈর্য ধরে আল্লাহ তাআলার রহমতে সে ব্যক্তি তার অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকে। আর আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকার চেয়ে বড় নেয়ামত কী হতে পারে?
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সুখ-দুঃখে সর্বাবস্থায় ধৈর্য এবং নামাজের মাধ্যমে দুনিয়ার যাবতীয় অপরাধ থেকে মুক্ত থাকা। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ধৈর্য ধরার মাধ্যমে দুনিয়ার সব অপরাধ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। ধৈর্যের গুণে নিজেদের আলোকিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আরএম-১৯/০৩/০২ (ধর্ম ডেস্ক)