মুসলিমদের পরিচ্ছন্নতার বিজ্ঞান, যার কাছে আধুনিক প্রসাধনীও তুচ্ছ

মুসলিমদের পরিচ্ছন্নতার

ইসলামে পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অঙ্গ বলা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, বাংলাদেশ-সহ মুসলিমপ্রধান অনেক দেশের মানুষ পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে খুবই উদাসীন। অথচ মধ্যযুগীয় মুসলিমদের অতীত ঘাটলে দেখা যায়, তাদের পরিচ্ছন্নতার কাছে আধুনিক প্রসাধনীও তুচ্ছ।

সম্প্রতি এক গবেষণায় মধ্যযুগীয় মুসলিম বিজ্ঞানীদের পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে অবাক করা ৯টি তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তৎকালীন মুসলিম বিজ্ঞানীরা যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করতেন, তার কাছে আধুনিক যুগের প্রসাধনীও হার মানতে সক্ষম। চলুন তথ্যগুলো জেনে নেয়া যাক–

১. মধ্যযুগের ইউরোপীয় সভ্যতায় মানুষ পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে খুব একটা সচেতন ছিলো না। কিন্তু সে সময়ের মুসলিম সভ্যতার মানুষ পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে ছিলো অত্যন্ত সচেতন।

২. এক হাজার বছর আগের মুসলিম সভ্যতায় যে সকল প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করা হতো, তা বর্তমান আধুনিক সময়ের প্রসাধন সামগ্রীর সাথেও প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম।

৩. পরিচ্ছন্নতাকে ইসলামে অত্যাধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। প্রত্যেক নামাজের আগে মুসলমানদের আবশ্যিকভাবে ওযু বা ইসলাম নির্দেশিত উপায়ে হাতমুখ পরিস্কার করতে হয়।

৪. ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মুসলিম বিজ্ঞানীরা ওযু করার জন্য একটি যন্ত্রই তৈরি করেছিলেন, যেটি ছিলো ময়ূরের মতো দেখতে এবং ওযুর জন্য এর মাথা হতে পানি বের হয়ে আসতো।

৫. ইরাকি বিজ্ঞানী আল-কিন্দি, যিনি ছিলেন আখেরি নবীর (দ) আহলে বায়েতের একনিষ্ট ভক্ত, তিনি সুগন্ধির ওপর একটি গ্রন্থ লেখেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন প্রকার সুগন্ধি তৈরির প্রক্রিয়া বর্ণনা করেন। আল-কিন্দির গ্রন্থে সুগন্ধি তৈরির ১০৭টি প্রক্রিয়ার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

৬. মুসলিম বিশ্ব হতেই ফ্রান্সে সুগন্ধি তৈরির বিদ্যা যায়, যা এখন বিভিন্ন প্রকার সুগন্ধি তৈরির জন্য বিখ্যাত।

৭. একহাজার বছরেরও অধিক আগে, আন্দালুসিয়ার মুসলিম সঙ্গীতশিল্পী এবং ফ্যাশন আইকন জিরাব দাঁত মাজার জন্য পেস্টের উদ্ভাবন করেন।

৮. কাপড় পরিষ্কারের জন্য জিরাব লবণ ব্যবহারের প্রচলন করেন।

৯. মুসলিম সাম্রাজ্যের প্রতিটি শহরেই হাম্মাম বা গোসলখানা ছিলো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

শুধু আবিষ্কারের জন্যই নয়, পাশাপাশি তাদের উত্তম কর্মভাব এবং পরিবেশের কারণেও মুসলিমদের হাজার বছরের যুগকে অমুসলিমরাও স্বর্ণালী যুগ আখ্যা দিয়েছে।

আরএম-০৭/১৪/০৪ (ধর্ম ডেস্ক)