আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা কবিরা গুনাহ

আত্মীয়তার সম্পর্ক

আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমন তার ফজিলতও অনেক বেশি। ইমাম নাসায়ী রহ. থেকে বর্ণিত, আনাস ইবনে মালেকের রেওয়ায়েতে রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি চায় যে, তার রিজিক প্রশস্ত ও জীবন দীর্ঘ হোক, তার উচিত আত্মীয়স্বজনদের সাথে সৎ ব্যবহার করা।’

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থ বয়সের বরকত ও কল্যাণ বৃদ্ধি পাওয়া। যেমন অন্য একটি হাদিসে ইবনে আবি হাতেমের রেওয়ায়েতে আবু দারদা রা: বলেন, ‘রাসূলের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি বলেন, … বয়স বৃদ্ধি পাওয়া অর্থ এই যে, আল্লাহ তায়ালা তাকে সৎকর্মপরায়ণ সন্তান-সন্ততি দান করেন। যারা সেই ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে থাকে। সে না থাকলেও কবরে তাদের দোয়া পেতে থাকে…।’

পার্থিব জীবনে আরাম-আয়েশ তথা শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য নেক ও সৎকর্মপরায়ণ সন্তান প্রয়োজন। আর তা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আশা করা যেতে পারে। কুরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এরই সুসংবাদ দেন আল্লাহ তাঁর সেসব বান্দাদের; যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, বলুন, আমি আমার দাওয়াতের জন্য তোমাদের কাছে কেবল আত্মীয়তাজনিত সৌহার্দ্য চাই…।’ (সূরা আশ শুরা:২৩)

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, ‘আর আল্লাহকে ভয় করো যার নামে তোমরা একে অন্যের নিকট যাঞ্ছা করে থাকো এবং আত্মীয়-জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করো’ (সূরা নেছা :১)

হাদিসে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তায়ালা যেসব গুনাহের শাস্তি ইহকাল ও পরকাল উভয় জায়গাতেই দেন সেগুলোর মধ্যে নিপীড়ন ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার সমান কোনো গুনাহ নাই’ (আঃ দাঃ তিরমিজি)

সহিহ বোখারিতে আবু হুরায়রা রা: ও অন্য দু’জন সাহাবি থেকে এ বিষয়ে বর্ণনা আছে যে, আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে ব্যক্তি আত্মীয়তা বজায় রাখবে আল্লাহ তায়ালা তাকে নৈকট্য দান করবেন এবং যে ব্যক্তি আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে ছিন্ন করবেন।’ হজরত সাওবান রা: বর্ণিত হাদিসে রাসূল স: বলেন, ‘যে ব্যক্তি আয় বৃদ্ধি ও রুজি-রোজগারে বরকত কামনা করে সে যেন আত্মীয়দের সাথে সদয় ব্যবহার করে।’

আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে কোনো আপেক্ষিতা নেই বা রাখা উচিত নয়; বরং অপর পক্ষ দুর্ব্যবহার করলেও প্রথম পক্ষ সৎ ব্যবহার করতে হবে- এটিই ইসলামের দাবি। এ সম্পর্কে রাসূল সা: বলেন, ‘সে ব্যক্তি আত্মীয়দের সাথে সৎ ব্যবহারকারী নয়, যে কেবল প্রতিদানের সমান সদ্ব্যবহার করে; বরং সেই সদ্ব্যবহারকারী যে অপর পক্ষ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করা হলেও সদ্ব্যবহার অব্যাহত রাখে।’ (ইবনে কাসির)

আরএম-২৮/০৩/০৬ (ধর্ম ডেস্ক)