হজ পালনে হাজির মর্যাদা ও ফজিলত

হজ পালনে

হজ মহান আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। তবে শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম ব্যক্তির জন্য তা পালন করা ফরজ। আর এ হজের রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত। তবে সে ফজিলত লাভে হজ একনিষ্ঠভাবে সঠিক পদ্ধতিতে আদায় করতে হবে।

আর্থিকভাবে সক্ষম ব্যক্তির জন্য দ্রুত আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে এ ইবাদতের বিকল্প নেই। সঠিকভাবে হজ সম্পাদনকারীকে আল্লাহ তাআলা নিষ্পাপ করে দেন। জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা ও স্থান দান করেন। হাদিসে এসেছে-

>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহর পথের মুজাহিদ এবং হজ ও ওমরাকারী হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।’ (ইবনে মাজাহ)

>> অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘হজ ও ওমরাকারীরা হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।’

হজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসের কিছু বর্ণনা তুলে ধরা হলো-

>> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি হজ করে এবং অশ্লীলতা ও কটুক্তি থেকে বিরত থাকে সে এমনভাবে ফিরে আসে করে, তার মা যেভাবে তাকে প্রসব করেছিল।’ (বুখারি)

>> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন। জিজ্ঞাসা করা হলো, এর পর কী? বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। বলা হলো, এরপর? তিনি বললেন, মাবরূর (কবুল) হজ।’ (বুখারি)

>> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন-

>> যে ব্যক্তি আল্লাহর কোনো মসজিদের উদ্দেশে বের হয়।

>> যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করতে বের হয়। আর

>> যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশে বের হয়।’

নারীদের হজের ফজিলত

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা জেহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। তাহলে আমরা (নারীরা) কি জেহাদ করব না?

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘না’। তোমাদের জন্য উত্তম জেহাদ হলো মাবরূর হজ।’ (বুখারি)

হজে খরচ করার ফজিলত

হজরত ইবনে আওন ইবরাহিম ও আসওয়াদের সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! লোকেরা তো দুইটি ইবাদত নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। আর আমি শুধু একটি নিয়ে ফিরব?

তখন তাঁকে বলা হলো, অপেক্ষা কর। যখন তুমি পবিত্র হবে তখন তানঈমে যাবে এবং (ওমরার) ইহরাম বাঁধবে। এরপর অমুক স্থানে যাও। অবশ্য এসবের প্রতিদান হবে তোমার ব্যয় ও কষ্ট অনুযায়ী।’ (বুখারি)

হজের সফরের ফজিলত

হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা হজ পালনকারীর জন্য তার উটনির (বাহনের) প্রতি কদমে একটি নেকি লেখেন কিংবা একটি গোনাহ মুছে দেন। অথবা একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।’ (ইবনে হিব্বান, বাইহাকি)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ পালনকারীকে সঠিক আক্বিদা বিশ্বাসের সঙ্গে যথাযথভাবে হজ পালন করে নিষ্পাপ হয়ে পরকালের প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরাকলের স্বচ্ছলতা ও সফলতা দান করুন। আমিন।

আরএম-১১/১৪/০৭ (ধর্ম ডেস্ক)