ইসলামের দৃষ্টিতে ঝগড়ার সময় তালাক চাওয়া

ইসলামের

প্রশ্ন : তিন বছর আগে আমার মামাতো বোনের বিয়ে হয়। ওর স্বামীর বয়স ওর চেয়ে অনেক বেশি। ফলে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতানৈক্য লেগেই থাকত। আর এই কারণে কোনো বিষয়ে কথা কাটাকাটি হলে ও তার স্বামীকে বলত, তুমি আমাকে তালাক দিয়ে দিলে আমার কোনো আপত্তি নেই।

কয়েকদিন আগে ওদের মধ্যে আবার ঝগড়া হয়। তখন আমার মামাতো বোন একপর্যায়ে বলে বসে, তাহলে তুমি আমাকে তালাক দিয়ে দাও। রাগের মাথায় তখন ওর স্বামীও বলে ফেলে যে, ঠিক আছে দিলাম। মুখে তালাক বা এধরনের কোনো শব্দ উল্লেখ করেননি। এ কথা বলার কারণে তাদের মধ্যে তালাক সাব্যস্ত হয়েছে? কয়েকজনকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তারা ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। এখন জানার বিষয় হলো, যদি তালাক হয়ে যায়, তাহলে একসঙ্গে থাকতে চাইলে কী করণীয়?

উত্তর : প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী স্ত্রী বলেছেন, ‘তুমি তালাক দিয়ে দাও’। এ কথার উত্তরে স্বামী বলেছেন ‘ঠিক আছে দিলাম’ তাই স্ত্রীর ওপর এক ‘তালাকে রাজয়ি’ পতিত হয়েছে। এখন স্বামী চাইলে ইদ্দতের মধ্যে পুনরায় তাকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। এক্ষেত্রে শুধু এতটুকু বললেও যথেষ্ট হবে যে, আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম বা স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নিলাম।

শরিয়তে তালাক বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চূড়ান্ত পদক্ষেপ। হাদিসে এটাকে ‘নিকৃষ্ট হালাল’ বলা হয়েছে। মূলত এটি দাম্পত্য-জীবনে সমস্যা জটিল হয়ে পড়লে উভয়ের তা থেকে নিষ্কৃতির সর্বশেষ উপায়। তাই তালাক দেওয়া ও নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভেবেচিন্তে ও পরামর্শ করে প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তুচ্ছ কারণে স্বামীকে তালাক দিতে বলা এবং সে অনুযায়ী স্বামীও তালাক দিয়ে দেওয়া বেশ অন্যায়; অনেক ক্ষেত্রে এটি সন্তানদের প্রতি জুলুম হয়ে যায়। তাই এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক থাকা চাই। শরিয়তে তালাক অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়, যা ইচ্ছা-অনিচ্ছায়, রাগ বা স্বাভাবিক অবস্থায়, এমনকি ঠাট্টাচ্ছলে দিলেও কার্যকর হয়ে যায়।

সূত্র : ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/৩৫৬; আদ্দুররুল মুখতার : ৩/২৯৪; আলমুহিতুল বুরহানি : ৪/৪০৫

আরএম-০৬/২২/০১ (ধর্ম ডেস্ক)