কীভাবে বুঝবেন গোনাহ করছেন?

কীভাবে বুঝবেন

গোনাহ মাফ বা ক্ষমা লাভের অন্যতম উপায় তাওবা-ইসতেগফার, দোয়া ও আমল এ রকম অনেক বর্ণনাই দেখা যায়। আর কুরআন-হাদিসেই এসব উপায়গুলো বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু গোনাহ কী? গোনাহ বলতে আসলে কী বোঝায়? এ সম্পর্কে কোনো ধারণা আছে কি?

গোনাহ সম্পর্কে অনেকরই ধারণা নেই। অনেক এমন অনেক কাজ করে, যেগুলো যে গোনাহের কাজ সেটিই তার জানা নেই। সে কারণে গোনাহের পরিচয় জানা আবশ্যক।আসুন জেনে নিই- গোনাহের পরিচয়, ধরণ ও প্রকার-

গোনাহ কাকে বলে?

‘গোনাহ’ শব্দটি ফারসি হলেও এটি শুনলে অনেকেই পাপকে বুঝে থাকে। আর বাস্তবেও তাই। ফারসি গোনাহ শব্দের বাংলা অর্থ হলো পাপ। অভিধানের আলোকে বাংলায় গোনাহ বলতে বোঝায়-

– অন্যায়;

– কলুষ;

– দুষ্কৃতি।

কিন্তু গোনাহ বা পাপের অনেক আরবি শব্দ থাকলেও মানুষ তা জানে না। মানুষ শুধু অন্যায় কাজ করলে তার গোনাহ বা পাপ হবে এমনটি জানে।

শব্দ বা ভাষা যা-ই হোক না কেন, ইসলামে সুনির্দিষ্ট কিছু কাজকে গোনাহ হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। আর তাহলো-

‘আল্লাহ ও তার রাসুলের যে কোনো আদেশ পালন না করা, নিষেধ থেকে ফিরে না থাকা। তাদের আদেশ-নিষেধের বিরুদ্ধাচরণ করা।’

এ বিরুদ্ধাচরণ হতে পারে-

– কথায়;

– কাজে;

– মৌন সম্মতিতে;

– প্রকাশ্যে

– অপ্রকাশ্যে।

গোনাহের ধরণ

দুনিয়াতে যত গোনাহ আছে, সব গোনাহকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

> বড় (কবিরা) গোনাহ;

> ছোট (সগিরা) গোনাহ।

কবিরা গোনাহ

আল্লাহ ও তার রাসুলের যে কোনো আদেশ-নিষেধ অমান্য করাই কবিরা গোনাহ। অনেক সময় এসব কাজ মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। সাধারণত কবিরা গোনাহ হলো-

– আল্লাহর সঙ্গে শিরক বা অংশীদার স্থাপন,

– পিতা-মাতার অবাধ্যতা,

– নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা,

– মিথ্যা,

– যাদুটোনা

– সুদ ইত্যাদি।

সর্বোপরি কথা হলো- যে সব গোনাহের ব্যাপারে বিশেষ কোনো শাস্তির বিধান আরোপ করা কথা এসেছে। যেগুলো শুধু হারাম বা নিষেধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং শাস্তিও নির্ধারিত।

সগিরা গোনাহ

যে গোনাহগুলো বড় গোনাহের অন্তর্ভূক্ত নয়, সেগুলোই সগিরা বা ছোট গোনাহ। তবে বার বার সগিরা বা ছোট গোনাহ করতে থাকলে তা একসময় বড় গোনাহে পরিণত হয়। তবে সগিরা বা ছোট গোনাহের ধরণ হলো এমন-

– নামাজে জামা-কাপড়, চুল-দাঁড়ি নিয়ে টানাটানি করা;

– নামাজে বিনা প্রয়োজনে গলা খাকড়ানো বা কাশি দেয়া;

– অযথা এদিক-সেদিক তাকানো;

– মানুষকে অভিশাপ দেয়া;

– অন্যায়ের পক্ষ অবলম্বনকরা;

– গোসলখানায়, চলাচলে রাস্তায় কিংবা গাছের ছায়ায় পেশাব করা;

– যে কোনো জিনিস অপচয় করা ইত্যাদি।

সর্বোপরি কথা হলো- যে সব কাজ করা হারাম কিন্তু এর জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো শাস্তি বিধান উল্লেখ নেই, তাই সগিরা গোনাহ।

উল্লেখিত কাজগুলো করা, কাউকে করতে বলা কিংবা কেউ করছে তা দেখা সত্ত্বেও তাকে নসিহত না করে চুপ থাকাও গোনাহের কাজ। এসব কাজগুলো থেকে বিরত থাকা খুবই জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহ ও তার রাসুলের কথা ও কাজের আদেশ-নিষেধের বিরোধিতাসহ যে কোনো গোনাহের কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরএম-২৫/২২/০১ (ধর্ম ডেস্ক)