সিরাজগঞ্জে শিক্ষককে তুলে নিয়ে পেটালেন অভিভাবকরা

সিরাজগঞ্জে গৃহ শিক্ষককে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে আটকে রেখে বেধরক পিটুনির অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের বিরুদ্ধে। পরে স্বজনদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অপহরণের ২ ঘণ্টা পর ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধারের পর ওই শিক্ষকের স্ত্রী সিরাজগঞ্জ সদর থানায় স্বামীকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগ করেছেন। এরপর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজের মেয়েকে দিয়ে যৌন হয়রানির পাল্টা অভিযোগ করান অভিযুক্ত অভিভাবক।

শুক্রবার সন্ধায় মেডিনোভা হাসপাতালের সামনে থেকে মোঃ আব্দুস সালাম নামে ওই শিক্ষককে অপহরণ করা হয়। তিনি জেলার কামারখন্দ উপজেলার ড. সালাম-জাহানারা ডিগ্রি কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

পরে রাতে শহরের বড়গোলা পট্টির তালুকদার ডেন্টাল ক্লিনিকের ভেতর থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর প্রথমে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে।

শিক্ষকের স্ত্রী সালমা খাতুন জানান, তার স্বামী তালুকদার ডেন্টাল ক্লিনিকের মালিক মোস্তাক আহম্মেদ মিঠুর মেয়ের গৃহশিক্ষক।

তিনি বলেন, কয়েক মাসের বকেয়া টিউশন ফি পরিশোধে বারবার তাগাদা দেওয়ায় আমার স্বামীকে অপহরণ ও মারপিট করে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ থানায় দেবার পর অপহরণকারীরা উল্টো আমার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মিথ্যে অভিযোগ দিয়েছে।

তবে অভিযুক্ত অভিভাবক মোস্তাক আহম্মেদ মিঠুর দাবি, তার মেয়েকে যৌন হয়রানি করায় গৃহ শিক্ষককে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়েছে মাত্র। সেটি অপহরণ নয়।

এদিকে এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে দু’টি অভিযোগ সদর থানায় জমা পড়লেও তার একটিও শনিবার সকাল পর্যন্ত রেকর্ড হয়নি।

ওই শিক্ষককে উদ্ধারকারী সদর থানার (এসআই) আলী জাহান বলেন, মোবাইল ট্র্যাকিং করে শিক্ষককে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগ দুটি খতিয়ে দেখে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ড. সালাম-জাহানারা ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল আজিজ সরকার বলেন, শিক্ষক সালাম যদি কোন অপরাধ করেও থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেবার সামাজিক বা আইনী ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু প্রকাশ্যে অপহরণ ও মারপিট করে আটকে রেখে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেবার বিষয়টি কোনভাবেই পাশ কাটিয়ে যাবার বিষয় নয়।

বিএ-১৫/২৫-০৫ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)