নেশায় বাধা দেয়ায় শিক্ষককে পেটাল স্কুলছাত্র

নেশা করতে বাধা দেয়ায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশের রঘুনিলী মঙ্গলবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক আইয়ূব আলীকে (২৮) মারধর করে আহত করেছে ওই বিদ্যালয়েরই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন ও তার স্বজনরা।

মঙ্গলবার সকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। সাব্বির উপজেলার নওগাঁর বিপাচান গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।

এদিকে সবার সামনে শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তারা অর্ধ-বার্ষিক ও প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেছেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষায় অংশ নেন তারা।

শিক্ষক আইয়ূব আলী অভিযোগ করে বলেন, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির কখনও শ্রেণিকক্ষে বসে আবার কখনও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ড্যান্ডি নেশা করে আসছিল বলে শ্রী শিবনাথ নামে এক ছাত্র আমার কাছে অভিযোগ করে। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার সাব্বিরকে বিদ্যালয়ে ডেকে এনে শাসন করার সময় সে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় তাকে একটা থাপ্পর মারা হয়।

তিনি জানান, এ কারণে সাব্বির, তার ভাই রাব্বি, চাচা আলাউদ্দিন ও রাব্বির বন্ধু কামরুল মঙ্গলবার সকালে আমাকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় উলিপুর বিপাচান ব্রিজ এলাকায় পথরোধ করে মারধর করে। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে সাব্বির ও তার স্বজনরা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আবারও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয়দের সামনে আমাকে স্টিলের স্কেল দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে গুরুতর জখম করে।

শিক্ষার্থী শিবনাথ, আছিফ হোসেন, রাজু ইসলাম, ইব্রাহীম হোসেন, রাবেয়া খাতুন, মরিয়ম খাতুনসহ অনেকেই জানায়, বিদ্যালয় চলাকালীন ক্যাম্পাসে ঢুকে সাব্বির ও তার স্বজনরা তাদের গণিত বিভাগের বিএসসি শিক্ষককে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। পরে তাদের প্রতিবাদের মুখে সাব্বির ও তার স্বজনরা পালিয়ে যায়।

তাড়াশ উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরহাদ হোসেন জানান, আহত শিক্ষককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

রঘুনিলী মঙ্গলবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউজ্জামান নান্নু বলেন, আমি লাইব্রেরিতে বসে কাজ করছিলাম। এ সময় হঠাৎ বাইরে বিশৃঙ্খলা দেখে পুলিশে খবর দেই। খবর পেয়ে পুলিশ বিদ্যালয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, একজন শিক্ষককে মারধর করার ঘটনা অনভিপ্রেত। তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএ-১৯/২৫-০৬ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)