হুবহু বাণিজ্যমন্ত্রীর কণ্ঠ, বিশ্বাস করে প্রতারিত পত্রিকার সম্পাদক

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কণ্ঠ নকল করে সিরাজগঞ্জের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক যমুনা প্রবাহর সম্পাদকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে একটি চক্র। চক্রের সদস্যরা নিজেদের মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পরিচয় দিয়ে ১৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগীর নাম মোস্তফা কামাল। প্রতারণার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাতে দৈনিক যমুনা প্রবাহর নির্বাহী সম্পাদক আব্দুল মজিদ সরকার বাদী হয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন।

এ ব্যাপারে যমুনা প্রবাহের সম্পাদক মোস্তফা কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ০১৯৯১-৫৬২২৪১ মোবাইল নম্বর থেকে তার ব্যক্তিগত নম্বরে রাশেদ নামে এক ব্যক্তি ফোন করেন। তিনি নিজেকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির এপিএস পরিচয় দেন।

রাশেদ তাকে বলেন, উন্নয়ন পরিকল্পনা অংশ হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি ১৭ জনের একটি দল সিরাজগঞ্জ আসবেন। তারা পাঁচদিন জেলায় অবস্থান করবেন। থাকা-খাওয়ার জন্য ভিআইপি হোটেলের ব্যবস্থা করতে হবে।

এরপর বাণিজ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলবেন বলে জানান। অপর এক ব্যক্তি তখন মোস্তফার সঙ্গে কথা বলেন; যার কণ্ঠ হুবহু টিপু মুনশির সঙ্গে মিলে যায়।

ওই ব্যক্তি মোস্তফাকে বলেন, রাশেদ যা বলেছে আপনি সেটি সমন্বয় করেন।

এরপর মোস্তফা স্থানীয় একটি অভিজাত হোটেলে রুম ও রেস্টুরেন্ট বুকিং করেন। পাঁচদিনের জন্য হোটেলে থাকা-খাওয়াসহ মোট ৫ লাখ টাকা বিল হয়। বিষয়টি তিনি রাশেদকে জানালে তিনি শহীদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির নম্বর (০১৭৭-৩৫৬০৬৭৩) দেন। মোস্তফাকে তিনি বলেন শহীদুল অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিলটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করবেন।

শহীদুলকে ফোন করলে তিনি মোস্তফাকে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে বলেন। শহীদুল বলেন, যেহেতু এটি সরকারি বিল; সেটি জমা করার আগে একটি ফি দিতে হয়। সে জন্য তার মোবাইল নম্বরে নগদ অ্যাকাউন্ট আছে উল্লেখ করে ১৯ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন।

বিষয়টি নিয়ে রাশেদের সঙ্গে কথা বলেন মোস্তফা। তিনিও একই কথা বললে শহীদুলের নগদ অ্যাকাউন্টে ১৯ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এরপর তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা জমা হয়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে মোস্তফা বার বার রাশেদ ও শহীদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা জানান, দুই ঘণ্টার মধ্যে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হবে। কিন্তু সেটি হয়নি। পরবর্তীতে নম্বরগুলোও বন্ধ পাওয়া গেছে।

পত্রিকা সম্পাদক মোস্তফা বলেন, যে ব্যক্তি মন্ত্রী হিসেবে কথা বলেছিলেন, তার কণ্ঠ হুবহু টিপু মুনশির সঙ্গে মিলে যায়। তাই সরল বিশ্বাসে টাকাগুলো দিয়েছিলাম।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সম্পাদক মোস্তফা কামালের সঙ্গে প্রতারণার এ ধরন অভিনব। আমরা অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টির তদন্ত করা হবে।

এসএইচ-১৪/০৫/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)