অা’লীগের টার্গেট নতুন ভোটার : বিএনপির কোনদিকে

নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার একই দিনে ঢাকার বাইরের দুটি এলাকা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার কার্যক্রম শুরু করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তাদের প্রচারণা শুরু করতে যাচ্ছে গোপালগঞ্জ থেকে। সেখানে দেশটির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবর জিয়ারত করে নিজের সংসদীয় আসন থেকে এই প্রচারাভিযান শুরু করছেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অন্যদিকে, বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আজ সিলেটে হযরত শাহজালাল ও শাহ পরানের মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করছে। ড. কামাল হোসেনসহ বিএনপির কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে এই প্রচারাভিযান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

গোপালগঞ্জ এদিকে থেকে ঢাকায় ফেরার পথে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ও বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি জনসভা ও পথ-সভায় বক্তব্য রাখবেন।

আওয়ামী লীগের একজন নেত্রী, সংসদ সদস্য মাহজাবীন খালেদ বলছিলেন, “নতুন ভোটারদের দিকে থাকবে তাদের মূল মনোযোগ।”

“ফার্স্ট ফোকাসই হবে – নতুন ভোটাররা। আমাদের যারা ২০০৮ সালে রেজিস্ট্রেশন হয়েছেন।”

তিনি বলেন, “তাদের সংখ্যা ২ কোটির ওপরে। এই নতুন ভোটাররা কিন্তু আমাদের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর একটা প্রভাব বিস্তার করবে।”

তিনি মনে করেন, নতুন ভোটাররা দেশের রাজনীতি এবং উন্নয়নের বিষয়ে সচেতন।

মাহজাবীন খালেদ বলেন, “নতুন ভোটারদের কয়েকজনের সাথে কথা হয়েছিল আমার। তারা কিন্তু বলেছে তারা স্থিতিশীল একটি সরকার দেখেতে চায়।”

তিনি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের বিষয়টি তারা তুলে ধরবেন ভোটারদের কাছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র এবং তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ‘ইয়ং আইকন’ এবং সে বিষয়টি তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দশ বছর পর বিএনপি এই প্রথম বাংলাদেশের কোন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে এবং কারাগারে থাকার কারণে তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকেই ছাড়াই শুরু হচ্ছে এই প্রচারণা

বিএনপির একজন নেত্রী রুমিন ফারহানা বলছিলেন, মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, ন্যুনতম সাংবিধানিক অধিকার যেন ফিরে পায় সেটাই তাদের নির্বাচনী প্রচারের মূল অংশ। অনলাইন ডেস্কতার ভাষায়, এক ব্যক্তির শাসন থেকে দেশকে বের করে আনা তাদের মুখ্য লক্ষ্য।

বিএনপির এক নেত্রী আজও বলেন “বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, এগুলোকে না বলা, দুর্নীতিকে না বলা, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ গত কয়েক বছরে যেটাকে এক হাত নিয়ে আসা হয়েছে সেই এক ব্যক্তির শাসন থেকে বের হয়ে এসে জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।”

বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল দুর্নীতিসহ একই ধরনের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধেও ছিল সে বিষয়ে তাদরে কী বক্তব্য জানতে চাইলে মিজ ফারহানা বলেন, “সে সময়কার তুলনায় গত কয়েক বছরে কয়েক গুণ বেশি এসব ঘটনা ঘটেছে।”

“২০০১ থেকে যে সরকার ছল তারা ছিল নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত সরকারের একটি জবাবদিহিতা থাকে। বিনা ভোটে নির্বাচিত হলে সে সরকারের কোন জবাবদিহিতা থাকে না।”

তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তারা যেসব বিষয়ে তুলে ধরবেন সে সম্পর্কে রুমিন ফারহানা বলেন—

৮ কোটি ৮২ লাখ তরুণ বেকার, সুতরাং এই বেকারত্ব দূর করার জন্য যা যা করা দরকার তা আমাদের ভিশনে বলেছি ইশতেহারেও বলবো।

বিনিয়োগ স্থবির হয়ে আছে। বিনিয়োগ চালুর চেষ্টা করবো-দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ, সরকারি বেসরকারি বিনিয়োগ যত বাড়ানো যাবে তত বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

দক্ষ কর্মশক্তি তৈরির চেষ্টা করবো, বিদেশে যাতে দক্ষ জনশক্তি পাঠানো যায়।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া কারাবন্দী থাকায় তারা নির্বাচিত হলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সে নিয়ে এক ধরনের প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রুমিন ফারহানা সরাসরি উত্তর এড়িয়ে যান।

তিনি বলেন, “এর চেয়ে বেশি জরুরি মানুষকে সুষ্ঠু পরিবেশে নিশ্চিত করা। আমি মনে করি এটা সময়ের হাতেই ছেড়ে দেয়া উচিত। যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে তারাই ঠিক করবে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন।”

এসএইচ-০৫/১২/১২ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্য সূত্র : বিবিসি)