ফের তিস্তা চুক্তির আশ্বাস ভারতের

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্রুত তিস্তা চুক্তি সম্পন্নসহ অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক অপরিবর্তনীয় রাখতে ভবিষ্যতমুখী রোডম্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ। এক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কের পরিধির বিস্তৃতি করতে চায় উভয় পক্ষই। এছাড়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখাইনে পাঠাতে বাংলাদেশকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে দেশটি।

শুক্রবার ভারতের দিল্লিতে দু’দেশের পঞ্চম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ পরামর্শক কমিশন-জেসিসি বৈঠকে এ সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। দিল্লির জওহরলাল নেহেরু ভবনে জেসিসি বৈঠকে যোগ দেন বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আর ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অভিন্ন নদীসহ তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যার দ্রুত সমাধানের অনুরোধ করেন।এ পরিপ্রেক্ষিতে সুষমা স্বরাজ তিস্তা চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশকে আশ্বাস দেন।

বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চার দফায় রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বৈঠকে সুষমা স্বরাজ জানান, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখাইনে পাঠাতে বাংলাদেশকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে ভারত। এছাড়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে নিরাপত্তা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, ব্যবসা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি-বিদ্যুৎ, নদীর পানিবণ্টন, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, সাংস্কৃতিক মানুষে মানুষে যোগাযোগ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিকে মাথায় রেখে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বেগবান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত এবং অন্যান্য সহযোগিতার বর্তমান অবস্থা কী সে বিষয়ে উভয় মন্ত্রী পর্যালোচনা করেন।

এছাড়া বৈঠকে সহযোগিতা ক্ষেত্র আরও বাড়াতে বৈঠকে ৪ টি সমঝোতা চুক্তি সই করা হয়। চুক্তিগুলো হচ্ছে ১,৮০০ মধ্যম সারির বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার চুক্তি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভারতের আয়ুশের মধ্যে চুক্তি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন ও ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের মধ্যে চুক্তি।

এছাড়া বেসরকারি খাতে ভারতের হিরানন্দিনী গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

জেসিসি বৈঠকে যোগ দিতে বুধবার দিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। দিল্লি সফরকালে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হওয়ার পর ড. এ কে আব্দুল মোমেনের এটাই প্রথম বিদেশ সফর। দিল্লি থেকে শনিবার ঢাকায় ফিরবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এসএইচ-১৭/০৮/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)