বিচার এড়াতে নতুন কৌশলে জামায়াত

বিচার এড়াতে নতুন কৌশলে জামায়াত। বিলুপ্ত হয়ে নতুন নামে রাজনীতিতে ফিরতে চায় যুদ্ধাপরাধী এই দল। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন দলের এক নেতা। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচার এড়াতে জামায়াত খোলস পাল্টানোর চেষ্টা করলেও বিচার এড়াতে পারবে না। বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামায়াতকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে বয়কট করার পরামর্শ তাদের।

স্বাধীনতা বিরোধী দল জামায়াতকে ‘অপরাধী সংগঠন’ হিসেবে রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর থেকে দাবি উঠে জামায়াতকেও বিচারের মুখোমুখি করার। কিন্তু তদন্ত শেষ হলেও আইনি জটিলতায় আটকে আছে এ বিচার।

সরকার যখন জামায়াতের বিচারে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে ঠিক তখনি বিচার এড়াতে দল হিসেবে জামায়াত নিজেদের বিলুপ্ত করার গুঞ্জন চলছে। জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে বিলুপ্ত করার আলোচনা স্তিমিত হলেও জামায়াতের সহকারী-সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগের পর আবার আলোচনা শুরু হয়েছে। দলটি বেশ কয়েকজন নেতা স্বীকার করলেও ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। যদিও বিষয়টি টেলিফোনে অস্বীকার করেছেন জামায়াত নেতা মতিউর রহমান আকন্দ।

তিনি বলেন, ‘না, এই ধরনের কোন বক্তব্য জামায়াতের কোথাও বলা হয়নি। এগুলো পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট এসেছে।’ এটা সত্য নয় বলে জানান তিনি।

সাবেক আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের মতে, নাম পরিবর্তন বা বিলুপ্ত যাই করা হোক না কেনো মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী দল হিসেবে তাদের বিচারে কোন বাধা থাকবে না।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘দল যদি বিলুপ্তও হয়ে যায় তারপরেও সেই দলের বিচার হতে পারে। সেই দল কী অপরাধ করেছে সেগুলো তো দেশবাসীর জানার অধিকার আছে।’

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থা নিয়েছিল, তারা একটা নতুন দল গঠন করলো এবং সেই দল ওই উদ্দেশ্যই পূরণ করতে চায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত মনে করেন, বিচারিক প্রক্রিয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে জামায়াতকে।

তিনি বলেন, ‘একাত্তরে ফ্যাসিস্ট অর্গানাইজেশনের যে কাঠামোটা ছিল এবং যে কনসেপ্টটা কাজ করেছে সেটা নিয়েই স্বাধীন বাংলাদেশে তারা তাদের ভূমিকা পালন করে চলেছে। বাংলাদেশকে যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করতে হয় তাহলে রাজনীতি, সমাজ, প্রশাসন সর্বক্ষেত্র থেকে তাদের একঘরে করতে হবে।’

বাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিলো জামায়াত। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর আবার রাজনীতির সুযোগ পায় তারা। তাই আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাহী আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ না করে জামায়াতকে বিচারের মুখোমুখি করলেই চিরতরে নিষিদ্ধ হবে দলটি।

এসএইচ-০৬/১৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)