ইউএস বাংলা ট্রাজেডি জটিলতায় আটকে আছে ক্ষতিপূরণ

নেপালে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স। তবে নিহত ও আহত যাত্রীদের মধ্যে ৩১ জনকে বীমা পরিশোধ বা ক্ষতিপূরণ দিলেও বাকি ৪০ জনের ক্ষতিপূরণ এখনো বুঝিয়ে দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানি ও এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দূর্ঘটনার চার সপ্তাহের মধ্যে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সকে বিমানটির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়। এছাড়া নিহতদের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫১ হাজার ১২০ ডলার নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি। তবে আহতদের ক্ষতির পরিমাণ, চিকিৎসা ব্যয় সবকিছু বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হয়েছে। নিহত ১৯জন বাংলাদেশির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।

নিহত আটজনের পরিবার এখনও ক্ষতিপূরণ পায়নি। আহত ৯জন বাংলাদেশির মধ্যে ছয়জনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে, তিনজন এখনও পাননি। এখন পর্যন্ত চিকিৎসা খরচ ছাড়াই বাংলাদেশি ২৫ জন আহত-নিহতদের পরিবারকে ১১ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৬ টাকা দিয়েছে সেনা কল্যাণ ইনস্যুরেন্স। নেপালের আহতরা এখনও কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি। নিহতদের মধ্যে ২ জনের পরিবারকে ৫১ হাজার ১২০ ডলার হারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ও পাবলিক রিলেশন্স) কামরুল ইসলাম বলেন, আহত-নিহতদের পরিবারকে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়ায় দ্রুত ক্ষতিপূরণ দিতেও আমরা সাহায্য করছি।

২০১৮ সালের ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৭১ জন আরোহী নিয়ে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস-২১১ ফ্লাইটটি। নেপালে পৌঁছানোর পর স্থানীয় সময় ২টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৩টা ৫ মিনিট) বোম্বাডিয়া কোম্পানির তৈরি ড্যাশ ৮ কিউ ৪০০ মডেলের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

এ ঘটনায় ওই ফ্লাইটের ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৭ জন ছিলেন বাংলাদেশি। আর আহতদের মধ্যে মালদ্বীপের একজন, নেপালের ১০ জন ও বাংলাদেশর ৯ জন। ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান ছিলেন ওই ফ্লাইটের পাইলটের দায়িত্বে। তার সঙ্গে কো-পাইলট হিসেবে ছিলেন পৃথুলা রশিদ।

ওই দুর্ঘটনার প্রায় ১০ মাস পর চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি নেপাল দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তদন্ত প্রতিবেদনে কাঠমান্ডুতে ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনার জন্য পাইলটের মানসিকভাবে অস্থির অবস্থায় দিকভ্রান্ত হয় এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাবকে দায়ী করা হয়। এছাড়া বিমানটি অবতরণের সময় কন্ট্রোল টাওয়ার ও বিমান কর্মীদের মধ্যে কিছু বিভ্রান্তিকেও সম্ভাব্য কারণগুলোর অংশ বলে মনে করছে কমিটি। তবে চূড়ান্ত এ প্রতিবেদনকে একপেশে বলছে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।

এসএইচ-০৯/১৩/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)