দূষণে প্রতি চারজনে একজনের মৃত্যু

বিশ্বে প্রতি চারজনের একজনের মৃত্যুর জন্য দায়ী মানুষসৃষ্ট পরিবেশ দূষণ। কল-কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া, ক্ষতিকর রাসায়নিকযুক্ত পানি ও নাজুক পরিবেশের কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। দূষিত পরিবেশ ও জলবায়ু কোটি কোটি মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে মহামারির দিকে। যার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বুধবার জাতিসংঘের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনে ভয়াবহ এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর এএফপির।

জাতিসংঘের গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট আউটলুক (জিইও) গত ছয় বছর ধরে এ রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে। ৭০টি দেশের ২৫০ জন বিজ্ঞানী এ রিপোর্ট প্রস্তুতে কাজ করেন।

এ বছরের প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে অসমতা আরও বেড়েছে। দরিদ্র দেশগুলোতের তুলনায় উন্নত দেশগুলোতে সম্পদের ভোগ, খাদ্যের অপচয় লাগামহীন।

তারা দেখার চেষ্টা করেছেন যে, জনস্বাস্থ্যের ওপর দূষণ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশের প্রভাব কতটা। সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বে যত রোগ ও মৃত্যু তার প্রায় ২৫ ভাগের কারণ পরিবেশের দুরবস্থা।

এর মধ্যে সবচেয়ে ওপরে আছে বায়ুদূষণ। এর কারণে বছরে ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর পানিদূষণ ও সুপেয় পানির অভাবে ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগে মারা যান আরও ১৪ লাখ মানুষ।

তাদের হিসাব অনুযায়ী, শুধু ২০১৫ সালেই ৯০ লাখ মানুষ পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে মারা গেছেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, জরুরি পদক্ষেপ না নেয়া হলে ২০৫০ সালের মধ্যে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার আরো অসংখ্য মানুষ মারা যাবেন। গরিব দেশগুলো বেশি ভুক্তভোগী হবে। গবেষণায় করা সুপারিশে বৈশ্বিক অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের ওপর জোর দেয়া হয়।

গবেষণার কো-চেয়ার জয়িতা গুপ্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, একটা স্বাস্থ্যকর বিশ্ব গড়ে তুলতে পারলে এটা যে শুধু বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে তা নয়, এটা দরিদ্রতম দেশগুলোর জীবনমানেরও উন্নয়ন করবে, কারণ তারা পরিষ্কার বাতাস ও পানির ওপর নির্ভরশীল।

এস্তোনিয়ার পরিবেশমন্ত্রী ও নাইরোবি সম্মেলনের সভাপতি সিম কিসলার বলেন, এখন আমরা ঘোষণা ও প্রতিশ্রুতি চাইছি, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে ভবিষ্যতে আমাদের আন্তর্জাতিক আইন করার দরকার হবে।

জাতিসংঘের পরিবেশ বিভাগের প্রধান জয়েস এমসুয়া বলেন, প্রবৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে পরিবেশ যে সরাসরি যুক্ত, তা পরিষ্কার। তাই দেরি না করে এখনই ব্যবস্থা নেবার ওপর জোর দেন তিনি।

এসএইচ-০৭/১৪/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)