নিউজিল্যান্ডে পারভীনকে হারিয়ে অসহায় পঙ্গু স্বামী

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় হুসনে আরা বেগম পারভীনকে (৪৫) হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন পঙ্গু স্বামী ফরিদ উদ্দিন (৫৫) ও তার একমাত্র মেয়ে স্কুলপড়ুয়া শিফা বেগম (১৩)। পঙ্গু স্বামী ফরিদ উদ্দিন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার উত্তর মিরেরচর গ্রামের মৃত হাজী মোকারম আলীর ছেলে।

১৯৯৪ সালে ফরিদ উদ্দিন ও নিহত পারভীন দম্পতির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। আর ওই বিয়ের কয়েক বছর তারা নিউজিল্যান্ডে চলে যান। শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসীর গুলিতে পারভীন নিহত হন। পারভীন গোলাপগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালহাটা গ্রামের মৃত আব্দুন নুরের মেয়ে।

দেশের বাড়িতে থাকা ফরিদ উদ্দিনের ভাতিজা নজরুল ইসলাম জানান, নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত অবস্থায় প্রায় ১৫ বছর পূর্বে চাচা ফরিদ উদ্দিনের সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা পঙ্গু হয়ে যায়। পঙ্গু হওয়ার পর হুইলচেয়ারে করে তাকে দেখাশোনা করতেন স্ত্রী পারভীন। ইচ্ছে হলেও তিনি অসুস্থতার কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দেশের বাড়িতে আসতে পারেননি। নিহত পারভীনও স্বামীকে অসুস্থ রেখে দেশের বাড়িতে থাকা আত্মীয়স্বজনদের দেখতে তেমন আসা-যাওয়া করতেন না।

তিনি জানান, পারভীন সর্বশেষ ২০০৯ সালে তার একমাত্র মেয়ে শিপা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে দেশে আসেন। মাত্র ১০ দিন দেশে অবস্থান করে স্বামীর টানে আবার নিউজিল্যান্ডে চলে যান। সেখানে গিয়ে মেয়ের পড়ালেখার ভরণপোষণ আর স্বামীর লালনপালন করতে থাকেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আর স্বামী সন্তানদের দেখাশোনায় দিন চলতে থাকে পারভীনের।

নজরুল ইসলাম আরও জানান, শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে স্বামীকে হুইলচেয়ারে করে সঙ্গে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদের ভেতরে রেখে তিনি মহিলা অংশে নামাজ পড়তে যান।

নজরুল ইসলাম জানান, এ সময় তিনি মসজিদের ভেতরে গুলির শব্ধ পেয়ে স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে যান। কিন্তু তার স্বামী বেঁচে গেলেও ওই সন্ত্রাসীর গুলিতে পারভীন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার এই অকালমৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়েন পঙ্গু স্বামী আর একমাত্র মেয়ে শিফা বেগম। তার মৃত্যুর খবরে মিরেরচর গ্রামে বইছে শোকের ছায়া। শনিবার পারভীনের শ্বশুরবাড়িতে গরিব অসহায় মানুষের মধ্যে শিরনী বিতরণ করা হয়েছে।

এসএইচ-০৮/১৭/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)