বহুতল ভবনের বাসিন্দারা জানে না ফায়ার ফাইটিং সরঞ্জামের ব্যবহার

বহুতল ভবনের বাসিন্দারা

রাজধানীর বেশিরভাগ বহুতল ভবনে ফায়ার ফাইটিং সরঞ্জাম নেই। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পোশাক কারখানা ও শপিং মলে অগ্নি নির্বাপক মহড়া দেখা গেলেও কোন সুউচ্চ ভবনের বাসিন্দাদের কখনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয় না।

এতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ভবনের বাসিন্দাদের দমকল বাহিনীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। ভবনের সিকিউরিটি গার্ডদেরও যদি অগ্নি নির্বাপন প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাহলেও আগুন নির্বাপনে অনেকটা কাজে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলেছে, দেশে গার্মেন্টস কারখানা, শিল্প, বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন, শপিং মলে অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। আগুন লেগে বহু মানুষের মৃত্যুর নজির রয়েছে। চলতি সপ্তাহেও দেশে বড় দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার একটি শপিং মলে আর অন্যটি পোশাক কারখানায়।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে আর এফ টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় আহতের সংখ্যা ৭০।

এ আগুন নেভাতে এসে দমকল বাহিনীর এক্সিলেটর সিঁড়ি, ট্রলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম চালানোর মতো প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব স্পষ্ট হয়েছে। আর এফ ভবনের সামনে চালনার অভাবে এইচ এক্সিলেটর সিঁড়ি ও ট্রলি বিশিষ্ট ক্রেনটি চালানো সক্ষম হয়নি।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরনো ঢাকার চকবাজারের চুরিহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটে। সরু গলি ও ফায়ার ফাইটিং অত্যাধুনিক সরঞ্জামের অভাবে দ্রুত আগুন কন্ট্রোল করা যায়নি। নিমতলীর ঘটনাও একই রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে দমকল বাহিনীকে।

ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন্স এন্ড মেইনটেন্যান্স বিভাগের পরিচালক মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, ফ্যাক্টরি সবক্ষেত্রেই আগুন মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতি এবং তড়িৎ পদক্ষেপের ঘাটতি দেখা যায়। ফায়ার ফাইটিং শুধু ফায়ার সার্ভিসের কাজ নয়।

ব্যক্তিগত পর্যায়ে সচেতনতা, প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। আর প্রতিটি ভবনে নিজস্ব টিম থাকা দরকার যাতে আগুন লাগলে দশ থেকে বিশ মিনিট ফাইট করতে পারে। কিন্তু সেটা আমাদের এখানে নেই।

তিনি আরও বলেন, দেখা যায়, নামে মাত্র ফায়ার ফাইটিং টিম রয়েছে, যাদের কোনো প্রফেশনাল ট্রেনিং নেই। নতুন অত্যাধুনিক কোনো ইকুইপমেন্ট নেই। পারসোনাল প্রটেকশন গিয়ার নেই।

অনেক বিল্ডিংয়ে ফায়ার ইকুইপমেন্ট লাগানো রয়েছে। কিন্তু ঠিকভাবে মেইনটেনেন্স করা হচ্ছে না। আবার লোকজন জানেও না কীভাবে এটা ব্যবহার করতে হবে।

যেহেতু পোশাক কারখানাতেই হাজার হাজার মানুষ এক সঙ্গে কাজ করে, তাই সেখানে আগুনে প্রাণহানির আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে।

আরএম-১৪/২৯/০৩ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্যসূত্র: আমাদের সময়)