রাজনৈতিক কর্মনৈপুণ্যে দীর্ঘমেয়াদি নারী রাষ্ট্রপ্রধানের জায়গায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন ইন্দিরা গান্ধী, মার্গারেট থ্যাচার, চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা, মেরি ম্যাকলিসসহ অনেকে। সেই সঙ্গে বিশ্ব ইতিহাসে ম্যাজিক লেডি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন তারা। তবে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে এমন নারী রাষ্ট্রপ্রধানদের সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি বিশ্ব নারী নেতৃত্বের অন্যতম প্রধান আইকনে পরিণত হয়েছেন তিনি। আজ আমরা জানবো বিশ্ব ইতিহাসের ম্যাজিক লেডিদের কথা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা প্রথমবার প্রধানমন্ত্রিত্ব পান ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন, ক্ষমতায় ছিলেন ২০০১ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত। দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় যোগ হবে আরও পাঁচ বছর। একজন নারীর এত লম্বা সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী থাকা ইতিহাসের অন্যরকম এক মাইলফলক বটে। ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় সপ্তম স্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা। ২০১০ সালে নিউইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরিপে তিনি বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীর মধ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেন। বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীদের তালিকা বিচারে ২০১৫ সালে তিনি ছিলেন ৫৯তম স্থানে। ২০১৪ সালে এ তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর স্থান ছিল ৪৭তম। ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ ৭০তম অধিবেশনে পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়ন্স অব দি আর্থ পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কারও লাভ করেন।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী
তিন মেয়াদে ইন্দিরা গান্ধী ক্ষমতায় ছিলেন ১৫ বছরের কিছু বেশি সময়। ১৯৬৬ সালের জানুয়ারি থেকে ’৭৭-এর মার্চ পর্যন্ত একটানা ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। পরের বার ১৯৮০ সালের ১৪ জানুয়ারি আবার প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হন। কিন্তু ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর আততায়ীর গুলিতে নিহত হন ইন্দিরা। শুধু প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনই করেননি, বরং থেকেছেন অন্য অনেক কাজে যুক্ত। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হিসেবে তিনি কাজ করেন ১৯৬৪-৬৬ পর্যন্ত। এরপর ’৬৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ’৬৯-এর ১৪ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তিনি সামলেছেন। ’৬৭-এর সেপ্টেম্বর থেকে ’৭৭-এর মার্চ পর্যন্ত পরমাণু শক্তিবিষয়ক দফতরেরও মন্ত্রী পদে কাজ করেন। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন ’৭০-এর জুন থেকে ’৭৩-এর নভেম্বর পর্যন্ত। এ ছাড়া মহাকাশ দফতরের মন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেন ’৭২-এর জুন থেকে ’৭৭-এর মার্চ পর্যন্ত। ১৯৮০ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি যোজনা কমিশনের চেয়ারপারসনের দায়িত্বও পালন করেন। এ ছাড়া বহু সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধী যুক্ত ছিলেন। যেমন- কমলা নেহরু মেমোরিয়াল হসপিটাল, গান্ধী স্মারকনিধি ও কস্তুরবা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। স্বরাজ ভবন ট্রাস্টের তিনি ছিলেন সভানেত্রী। এ ছাড়া তিনি যুক্ত ছিলেন বালসহযোগ, বালভবন পর্ষদ ও চিলড্রেন্স ন্যাশনাল মিউজিয়ামের সঙ্গে (১৯৫৫)। এলাহাবাদে কমলা নেহরু বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাও করেছিলেন তিনি। ১৯৬০-৬৪ সাল পর্যন্ত ইউনেস্কোর ভারতীয় প্রতিনিধি দলেও ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার
ব্রিটিশ লৌহমানবী মার্গারেট থ্যাচার। রাজনীতিতে ছিলেন কনজারভেটিভ পার্টির নেত্রী। আপসহীন এক নেত্রী ও ব্রিটিশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিলেন। আর তা থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকা নারীপ্রধানদের মধ্যে অন্যতম। এর আগে ১৯৭০ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে কনজারভেটিভ পার্টিতে জয়লাভ করেন। এরপর থ্যাচার মন্ত্রিপরিষদে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। এরপর থেকে নিজেকে পদে পদে প্রমাণ করে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদ অলঙ্করণ করেন। কিন্তু তার নারীবাদী ভূমিকা ব্যাপক প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। থ্যাচার নারীপ্রধানদের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য স্থান পেলেও দীর্ঘ ১১ বছরের ক্ষমতায় মন্ত্রিসভায় মাত্র একজন নারী মন্ত্রী নিয়োগ করেছিলেন। আর তা নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। এ ছাড়া ঘন ঘন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করতেন। ১৯৮৬ সালের দিকে দ্য সানডে টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে রানী ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতানৈক্যের সংবাদ দেয়। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় বিশ্বজুড়ে। ১৯৯০ সালের ১ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদের সবচেয়ে পুরনো মন্ত্রী গফ্রি হয়ি সহকারী প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলে তার প্রধানমন্ত্রিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। এরপর নিজ পার্টি থেকে চাপের মুখে পড়ে থ্যাচার পদত্যাগ করেন। থ্যাচারের জীবনী নিয়ে লেখক জন ক্যামপেবল বিদেশি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘থ্যাচার সত্যিই একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। ব্রিটিশ রাজনীতির ইতিহাসে প্রথম পেশাদারী নারী।’
আইসল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিগদিস ভিনগোদি
দীর্ঘমেয়াদি নারী সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন আইসল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিগদিস ভিনগোদি। তিনি ১৯৮০ সালের ১ আগস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের ১ আগস্ট পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। আইসল্যান্ড ও ইউরোপের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট তিনি। গণতান্ত্রিকভাবে প্রেসিডেন্ট হওয়া ভিনগোদি দীর্ঘ ১৬ বছর রাজত্ব করা সত্ত্বেও বিশ্ব রাজনীতিতে নারী নেতৃত্বদানকারী হিসেবে খুব বেশি আলোচিত নন। ভিনগোদি ১৯৮০ সালে প্রথম নির্বাচনে ৩৩.৬ ভাগ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। পরে আইসল্যান্ডের রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণের কাছে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন যে, ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন। চার বছর পর ১৯৯২ সালে ৯৪.৬ ভাগ ভোট পেয়ে বাধাহীন জয় পান। ভিনগোদি সমকামীকে অনুমোদন দেওয়া রাষ্ট্র আইসল্যান্ডের আজ পর্যন্ত একমাত্র নারী প্রেসিডেন্ট। দেশটির ইতিহাসে আরেকজন নারী প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন যার নাম জোহানা সিজুরগাদাতির। অফিশিয়ালি ২০০৯ সালে অফিসে পুরুষ ও মহিলাদের অংশগ্রহণ সমান করা হয়। একই বছর দেশটির সরকার খোলামেলা সমকামিতার অনুমোদন দিয়ে বিশ্বে আলোচিত হয়। দেশটি ২০১৫ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার ইকুয়াল ইনডেস্কে প্রথম স্থান পায়। গণমাধ্যমকে প্রেসিডেন্ট ভিনগোদি বলেন, ‘আমি আইসল্যান্ডের নারীদের আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে পেরেছি এবং তারা প্রত্যেকেই আমাকে তাদের আইকন হিসেবে দেখে।’
আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি ম্যাকলিস
মেরি ম্যাকলিস ছিলেন আয়ারল্যান্ডের অষ্টম রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি এক যুগের বেশি, ১৩ বছর ৩৬৪ দিন ক্ষমতায় ছিলেন। ১৯৯৭ সালের নভেম্বরে ক্ষমতায় আরোহণ করেন, দীর্ঘ সময় দেশটির শাসন ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থানের পর ২০১১ সালের নভেম্বরে ক্ষমতা ত্যাগ করেন। তিনি ছিলেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান। একই সঙ্গে তিনিই ছিলেন নর্দান আয়ারল্যান্ড থেকে আসা প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ও আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী প্রেসিডেন্ট। তিনি দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসেন ২০০৪ সালে। ছোটবেলা থেকেই অসম্ভব মেধাবী ছিলেন মেরি ম্যাকলিস। তিনি পড়াশোনা করেন আইন বিষয়ে কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে খুবই ভালো রেজাল্ট করার পর ১৯৭৫ সালে ট্রিনিট্রি কলেজের প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ পান ক্রিমিনাল লতে। পরে কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত আসেন বিভাগীয় পরিচালক পদে। ১৯৯৪ সালে তিনি প্রথম নারী হিসেবে কুইন্স ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পান। সাফল্যময় কর্মজীবনে তিনি সবসময় ভেবেছেন কীভাবে দেশ ও দশের উন্নয়ন করা যায়। মেরি ম্যাকলিস দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আরোহণ করার পর থেকেই জনপ্রিয়তার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করেন দীর্ঘ সময়। নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের সমঅধিকার, সামাজিক ব্যবধান দূরীকরণে কাজ করে সাফল্য পেয়েছেন এই নারী রাষ্ট্রপ্রধান।
শ্রীলঙ্কার সাবেক রাষ্ট্রপতি চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা
চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গার জন্ম ১৯৪৫ সালের ২৯ নভেম্বর কলম্বোয়। তিনি শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। দেশটির ইতিহাসে পঞ্চম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। চন্দ্রিকা ১৯৯৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০০৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। এখন পর্যন্ত তিনি শ্রীলঙ্কার একমাত্র মহিলা হিসেবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কার সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীর কন্যা তিনি। ২০০৫ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির (এসএলএফপি) দলীয় প্রধান ছিলেন চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা। ১৯৭৪ সালে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির সক্রিয় কর্মী হিসেবে মহিলা লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭২-৭৬ সময়ে তিনি শ্রীলঙ্কায় ভূমি পুনর্গঠন কমিশনের প্রধান পরিচালক ছিলেন। ১৯৭৬-৭৭ সময়ে জনভাষা কমিশনের চেয়ারম্যান হন এবং সম্মিলিত খামার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৬-৭৯ মেয়াদে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করেন। শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি ত্যাগ করে স্বামী বিজয় কুমারাতুঙ্গার দল শ্রীলঙ্কা মহাজন পার্টিকে সমর্থন দেন। স্বামীর মৃত্যুর পর দেশত্যাগ করে যুক্তরাজ্যে চলে যান। এরপর জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমুখী অর্থনীতি গবেষণা বিশ্ব সংস্থায় কাজ করেন। ১৯৫৯ সালে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কর্তৃক তার বাবা নিহত হন। এরপর চন্দ্রিকার মা সিরিমাভো বন্দরনায়েকে শ্রীলঙ্কা তথা বিশ্বের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন। অনুরা বন্দরনায়েকে, সুনেত্রা বন্দরনায়েকে দুজনই চন্দ্রিকার ভাইবোন। তাদের দাদা স্যার সলোমন ডায়াস বন্দরনায়েকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে সিলনের প্রতিনিধি ও সিলন গভর্নরের পরামর্শক ছিলেন। কলম্বোর সেন্ট ব্রিজেটস কনভেন্টে অধ্যয়ন করেন। এরপর একুইনাস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি নিয়ে পাঁচ বছর ফ্রান্সে অবস্থান করেন। তিনি প্যারিস থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
দেশ পরিচালনার ইতিহাসে সর্বোচ্চ মেয়াদের নারী নেতৃত্ব
দেশ পরিচালনায় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে এশিয়ার দ্বীপদেশ তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সেই ইং-ওয়েন। একই মাসে মার্শাল আইসল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন হিন্ডা হেইন। মধ্য জুলাইয়ে এসে নারী নেতাদের কাতারে যুক্ত হন ব্রিটেনের থেরেসা মে। ব্রেক্সিট ভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসার গণভোটের পর রাজনৈতিক পালাবদলে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে সামনে চলে আসেন ৫৯ বছর বয়সী ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের এই নারী।
২০১৫ সালে পাঁচটি দেশে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান হিসেবে নেতৃত্বে যুক্ত হন নারীরা। সেগুলো হলো- সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, নামিবিয়া ও নেপাল। তবে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব প্রতি বছর পরিবর্তন হওয়ায় ২০১৬ সালে ওই পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন জোহানস্নাইডার আম্মান।
২০১৪ সালে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ২০ জন নারী। সে হিসেবে বছরটি ভবিষ্যৎ নারী নেতাদের জন্য অনুপ্রেরণার বছর হিসেবেও কাজে দেবে। এরই মধ্যে ২০১৬ সালে অনিয়মের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত হন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রউসেফ। কিন্তু অনেক নারী সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান বছরের পর বছর ধরে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছেন। নারী নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় সরকারপ্রধানের দায়িত্বে আছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, যিনি ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর ক্ষমতায় আসেন এবং এখন পর্যন্ত তৃতীয় দফায় দায়িত্ব পালন করছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যালেন জনসন সারলিফ। তিনি ২০০৬ থেকে ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এ মুহূর্তে বিশ্বে টানা ক্ষমতায় থাকা নারী সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের তালিকায় শীর্ষে আছেন সেন্ট লুসিয়ার গভর্নর জেনারেল ডেম পারলেত লুইজি। ১৯৯৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। অর্থাৎ ২০ বছর ১০৫ দিন ডেম পারলেত লুইজি রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। অবশ্য সেন্ট লুসিয়ার গভর্নর জেনারেল ডেম পারলেত লুইজি বিশ্ব রাজনীতিতে তেমন আলোচিত সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান নন।
আরএম-০৩/৩০/০৪ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট)