বাংলাদেশে ফণী কতটা আতঙ্কের

বাংলাদেশে আবহাওয়া বিভাগের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী যখন বাংলাদেশের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলে ঢুকবে, তখন এর গতি হবে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। এই মাত্রার ঝড় নিয়ে কতটা আতঙ্কের কারণ রয়েছে?

বজলুর রশীদ বলছেন, “আমি বলবো সাধারণ মাত্রার একটি ঘূর্ণিঝড় আসছে। গতি ৯০ কিলোমিটারের বেশি হলে আমরা তাকে অতি প্রবল ঝড় বলি। তবে ধীরে ধীরে এটি শক্তি হারাচ্ছে।”

“ফণী পুরোপুরি ডাঙ্গায় উঠে গেছে। উড়িষ্যা থেকে এখন এটি পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগুচ্ছে। মধ্যরাতের পরে যে কোনো সময় সেটি খুলনা, সাতক্ষীরায় ঢুকবে। যত এগুবে তত শক্তি হারাতে থাকবে।”

তারপরও ঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নিচু অঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে পারে। বৃষ্টি হবে অনেক। ঝড়ো বাতাসে কাঁচা ঘরবাড়ি কিছু নষ্ট হতে পারে। ঝড়ো বাতাসে এবং জমি প্লাবিত হওয়ায় অনেক জায়গায় ফসল নষ্ট হবে।

“মারাত্মক কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই। তবে মধ্যরাত থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত সাবধানে থাকতে হবে।”

আবহাওয়া বিভাগ মংলা এবং পায়রা বন্দরের জন্য ৭ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত অব্যাহত রেখেছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে বহু মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার জুড়ে ঝড়ো বাতাস-বৃষ্টি

বজলুর রশীদ বলছেন, বাংলাদেশের ঢোকার পর কুষ্টিয়া, পাবনা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর হয়ে ঝড়টি শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ ভারতের মেঘালয়ে ঢুকে যাবে ।

এসময় এসব জায়গাগুলোত বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। সাথে থাকবে দমকা ঝড়ো বাতাস। তবে যত সময় যাবে, বৃষ্টি এবং বাতাসের তীব্রতা কমতে থাকবে। “রোববার নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে ধারণা করছি।”

রশীদ যখন একথা বলছিলেন তখন শুক্রবার বেলা চারটা। ধেয়ে আসা ঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ছাড়াও বাংলাদেশের বহু জায়গায় সকাল থেকে কম-বেশি বৃষ্টি হচ্ছে।

বাগেরহাটের মংলায় রয়েছেন সংবাদদাতা আকবর হোসেন। সেখান থেকে বিকেলের দিকে তিনি জানান, আকাশ সারাদিন ধরেই মেঘলা, গুমোট এবং থেকে থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।

আবহাওয়া দপ্তরের সাবেক পরিচালক শাহ আলম বলেন, দেশে ঢোকার পর ফণীর তীব্রতা বেশী না হলেও, রাতের বেলায় ঢোকার কারণে কিছুটা বাড়তি বিপত্তি তৈরি হতে পারে।

“উড়িষ্যায় ঝড়টি ঢুকেছে দিনের বেলায়, ফলে প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতি সামলানো অনেক সহজ হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এর মূল প্রভাবটি পড়বে মধ্যরাতের পর, সেটা একটি চিন্তার বিষয়।”

আলম বলছেন, “রাতে মানুষ আতঙ্কিত থাকে বেশি, যাতায়াত করা কঠিন হয়, রাস্তা খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হয়।”

এসএইচ-৩৩/০৩/১৯ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্যসূত্র : বিবিসি)