প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়, বজ্রপাত ও বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে সারাদেশে ১৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক। শুক্রবার ও শনিবার দেশের ৮টি জেলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে শনিবার ভোলা জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কুরালিয়া গ্রামে ঘরচাপা পড়ে আনোয়ারা বেগম নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। চাঁদপুর সদর উপজেলায় ভোর পৌঁনে ৪টার দিকে ঘরবাড়ি ধসে কমপক্ষে ৫ জন আহত হন।
নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলার সূবর্ণচরে ঘরচাপা পড়ে চর আমিনুল হক গ্রামের আবদুর রহমানের দুই বছরের শিশু সন্তান ইসমাইল মারা গেছে। চর ওয়াপদা ও চর জব্বর ইউনিয়নে ৩০ জন আহত এবং শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় শনিবার ভোরে ঘরের নিচে চাপা পড়ে দাদি ও নাতির মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন- আব্দুল বারেকের স্ত্রী নুরজাহান বেগম ও তার নাতি জাহিদুল ইসলাম (৮)। এদের বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়ার খাল গ্রামে।
এদিকে শুক্রবার (৩ মে) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া, মিঠামইন ও ইটনা উপজেলায় বজ্রপাতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে পাকুন্দিয়ার ৩ জন, মিঠামইনের ২ জন ও ইটনার ১ জন রয়েছেন। নিহতরা হলেন- পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের কুর্শাকান্দা গ্রামের আয়াজ আলীর ছেলে আসাদ মিয়া (৫৫), একই উপজেলার চরফরাদি ইউনিয়নের আলগীরচর গ্রামের আবদুল হালিমের মেয়ে নুরুন্নাহার, একই এলাকার এন্তাজ আলীর ছেলে মুজিবুর, মিঠামইন উপজেলার বৈরাটি ইউনিয়নের বিরামচর গ্রামের গোলাপ মিয়ার ছেলে মহিউদ্দিন, একই উপজেলার কেওয়াজোড় ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের এবাদ মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (৭) ও ইটনা উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের কাটুইর গ্রামের রাখেশ দাসের ছেলে রুবেল দাস।
এছাড়া জেলার তাড়াইল উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে কলা গাছে বিদ্যুতের তার সংযোগ হওয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৮/৯ বছরের একটি কন্যা শিশু মারা গেছে।
নেত্রকোনার মদন উপজেলার কদমশ্রী হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম আব্দুল বারেক। তিনি মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের মনিকা পশ্চিম পাড়া গ্রামের মৃত রোমালির ছেলে।
জেলার খালিয়াজুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম মাহমুদ আলী জানান, উপজেলার পটুয়াগ্রামের কৃষক মহসিন মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।
বাহাগেরট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে শুক্রবার দুপুরে সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে চোরামনকাটি গ্রামে ঝড়ো হাওয়ায় গাছের ডাল ভেঙে পড়ে শাহানুর বেগম নামে এক নারী নিহত হন। তিনি ওই গ্রামের মোজাহারের স্ত্রী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, জেলার নবীনগর উপজেলায় বজ্রপাতে আপেল মিয়া নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ফণির প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টির সময় এ ঘটনা ঘটে।
মাদারীপুরে ঘূর্ণিঝড় ফণী ঘিরে দেয়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচলের সময় শুক্রবার বিকেলে এক যাত্রী নিহত ও ১০ যাত্রী আহত হন। স্পিডবোট ও ট্রলারের সংঘর্ষে আহত মুরাদ (২৫) নামের যাত্রী নিহত হন।
এ ঘটনায় আমির হামজা নামে ৬ বছর বয়সী একটি শিশুসহ ২১ বছর বয়সী এক যুবকের লাশ আজ উদ্ধার হয়েছে।
এসএইচ-১২/০৪/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)