আইএস ’এ যোগ দেয়া মান্নান পরিবারের কেউ বেঁচে নেই

ব্রিটেনের বেডফোর্ডশায়ারের লুটনে বসবাসরত মান্নান পরিবারের ১২ জন সদস্য সিরিয়াতে যোগ দিয়েছিল আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে। এদের মধ্যে ৩ জন আইএস সন্ত্রাসীদের হয়ে সরাসরি যুদ্ধ করতে যেয়ে মারা যায়। এক থেকে এগারো বয়সের অপর ৩ শিশু সহ ৭ জন মারা গেছে আইএস জঙ্গিদের লক্ষ্য করে বিমান হামলায়।

পরিবারটির সদস্যরা ২০১৫ সালের মে মাসে সিরিয়া চলে যায়। এরপর পরিবারটি অন্যতম সদস্য ২৫ বছরের মোহাম্মদ জায়েদ হোসেন রাকায় মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে মারা যায়। পরিবারটির শীর্ষ ব্যক্তি ও অভিভাবক মুহাম্মদ মান্নান এবং তার স্ত্রী মিনারা রাকায় মারা যায়।

মান্নানের এক পুত্র সেলিম যিনি তাদের সঙ্গে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দিতে যাননি তিনি এখনো বেডফোর্ডশায়ারে বাস করছেন। মেইল অনলাইনকে সেলিম জানান, তারা সবাই মারা গেছে। সব শেষ হয়ে গেছে। এটা এক বিয়োগান্তক অধ্যায়।

২০১৫ সালে মান্নান পরিবারের তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় যেয়ে আইএস জঙ্গিদের যোগ দেয়ার খবরটি বেশ ফলাও করে প্রচার হয় আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়। তাদের স্বজনরা জানান, সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের পরাজয়ের পর ওই পরিবারটির সদস্যরা লন্ডনে ফের ফিরে আসার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় এবং একে একে তাদের সবাই মারা যায়।

সিরিয়ায় পৌঁছে মান্নান পরিবারের পক্ষ থেকে দুই মাস পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, তারা মানব রচিত আইন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইতে যোগ দিতে আইএস’এ যোগ দিয়েছে। আইএস’এ যোগ দিয়ে তারা খুব খুশী বলেও ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল।

তবে ব্রিটেন থেকে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক হিসেবে ৭৫ বছরের মান্নানই সিরিয়ায় গিয়ে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেয়। মান্নান ডায়বেটিস ও অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং তার স্ত্রীর ক্যান্সার ছিল। মান্নানের দুই পুত্র জায়েদ ও তৌফিক মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে যেয়ে রাকায় মারা যায়।

তার আরেক পুত্র আবিল কাশেম সাকের সিরিয়ায় বাগহোজে আইএস জঙ্গিদের হয়ে লড়াই করতে যেয়ে মারা যায়। পরিবারের বাকি সদস্য ও তিন শিশু পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে পালিয়ে বাঁচতে যেয়ে বিমান হামলায় মারা যায়। সেখানে তখন ব্যাপক বোমা বর্ষণ হচ্ছিল।

লন্ডনে থাকতে বারি পার্ক মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তে যেত মান্নান। এ মসজিদ কমিটির চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, মান্নান পরিবারের সবাই মারা যাওয়া অবিশ^াস্য এক ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে। তারা যখন সিরিয়া চলে যায়, সে খবর শুনে আমরা সবাই খুব মর্মাহত হই।

এসএইচ-০৯/২৯/১৯ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্য সূত্র : ডেইলি মেইল/দি সান)