জাতিসংঘের আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা

নেদারল্যান্ডসের হেগের দি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) সোমবার অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের পক্ষে গাম্বিয়া এই মামলা দায়ের করে৷

গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবুবকর মেরি তাম্বাদু এপিকে বলেন, এটা আমাদের প্রজন্মের জন্য লজ্জার বিষয় যে আমাদের চোখের সামনে ওই গণহত্যা হলেও তখন আমরা কিছুই করিনি৷ এক বিবৃতিতে তিনি বলছেন, ওই গণহত্যার ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যই গাম্বিয়া এই মামলা করেছে৷

মামলার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে৷

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় বিদ্রোহীদের হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান৷ তখন বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা চলে আসেন৷ গত দুই বছরে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়৷

দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা তাদের উপর নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ তুলে ধরেন, যাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ৷

আইসিজে হল জাতিসংঘের প্রধান বিচারিক অঙ্গ; ১৯৪৫ সালে গঠনের পরের বছর থেকে এই আদালত কার্যকর রয়েছে৷

গাম্বিয়ার মামলাটি আইসিজে বিচারের জন্য গ্রহণ করলে এটাই হবে গণহত্যার নিজস্ব তদন্তে আইসিজের প্রথম উদ্যোগ৷ আইসিজের বিধি অনুসারে, জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত এক দেশ অন্য দেশের বিরুদ্ধে আ্ন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ তুলতে পারে৷

গণহত্যা প্রতিরোধ ও এর শাস্তি বিধানে ১৯৮৪ সালে স্বাক্ষরিত কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে৷ ১৯৫৬ সালে ওই জেনোসাইড কনভেনশনে সই করে মিয়ানমার৷

রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় আনতে ১০টি সংগঠন গাম্বিয়াকে সহায়তা করছে, তাদের একটি হল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)৷

এইচআরডব্লিউর পরিচালক পরম-প্রিত সিং এক বিবৃতিতে বলেন, “গাম্বিয়ার এই আইনি পদক্ষেপের ফলে বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হল৷ এখন আদালত রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচাতে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নিতে পারে৷”

এসএইচ-০৫/১২/১৯ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্য সূত্র : ডয়চে ভেলে)