বাদাবনের ছবি তুলে বিজয়ী বাংলাদেশি আলোকচিত্রী

এবছরের ম্যানগ্রোভ ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতায় সার্বিকভাবে বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহমান। বাংলাদেশে সুন্দরবনের এক মৌয়াল কীভাবে বিশাল মৌমাছির ঝাঁককে তাড়িয়ে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করছেন তার ছবি এ বছরের প্রতিযোগিতায় সবসেরা ছবি নির্বাচিত হয়েছে।

বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে এক মৌয়াল মৌচাকে আগুনের ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছিদের তাড়িয়ে মধু সংগ্রহ করছেন।

এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল ম্যানগ্রোভ অ্যাকশন প্রজেক্ট নামে একটি সংস্থা, যাদের মূল লক্ষ্য বিশ্বের বাদাবনগুলোর সংরক্ষণ। এটি ছিল সংস্থার সপ্তম বছরের প্রতিযোগিতা।

প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য হল জঙ্গলের জীবন, উপকূলের মানুষ এবং বাদাবনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে ছবির মধ্যে দিয়ে তুলে ধরা। পাশাপাশি এটাও দেখানো যে পানির নিচে এবং পানির ওপরে যে অসাধারণ প্রাণবৈচিত্র্য আছে তা কতটা ভঙ্গুর।

মুশফিকুর রহমানের এই ছবিটির নাম – অ্যা ব্রেভ লাইভলিহুড- দুঃসাহসিক এক জীবিকা। ৬৫টি দেশ থেকে পাঠানো ১,৩০০ ছবির মধ্যে এই ছবিটি সর্বসেরা ছবির স্বীকৃতি পেয়েছে।

“বংশ পরম্পরায় মধু সংগ্রাহক এই মৌয়ালদের রক্ষাকর্ত্রী হলেন বনবিবি- অরণ্যের দেবী। বিপদসঙ্কুল বাদাবনে বাঘ এবং কুমীর-কামটের বিপদ থেকে মৌয়ালদের তিনিই রক্ষা করেন,” বলেন মি. রহমান।

“বাংলাদেশের সুন্দরবনে, এবং এই ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ভারতীয় অংশেও পুরনো নানান জীবিকা ও মানুষের প্রথাগত জীবনের সাথে জঙ্গলের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে টিকে রয়েছে।”

বাদাবন জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব ঠেকানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাজনের এক একর রেইনফরেস্ট বা চিরহরিৎ বনভূমি যতটা কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নিতে সক্ষম, ঠিক একই পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের ক্ষমতা আছে এক একর (৪০০০ বর্গ মিটার) ম্যানগ্রোভ অরণ্যের।

ম্যানগ্রোভ অরণ্য প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝা থেকে উপকূলের ভাঙন রোধেও কাজ করে।

“পৃথিবীতে আদিতে যে পরিমাণ ম্যানগ্রোভ বা বাদাবনের আচ্ছাদন ছিল, এখন তার অর্ধেকেরও কম টিকে আছে,” বলছেন প্রতিযোগিতার বিচারক রবার্ট আরউইন।

“তাই ফটোগ্রাফির মধ্যে দিয়ে ভঙ্গুর এই প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করা এখন খুবই জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এবারের প্রতিযোগিতায় ছিল ছয়টি ভিন্ন ক্যাটেগরি।

এসএইচ-০১/১৭/২১ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্যসূত্র : বিবিসি)