ফের করোনার বিধিনিষেধের আওতায় পুরো দেশ

ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার থেকে আবার বিধিনিষেধের কড়াকড়ি শুরু হয়েছে৷ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ১১টি ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার৷

প্রায় পাঁচ মাস পর আবার শুরু হওয়া এই বিধি-নিষেধের কারণে উন্মুক্ত স্থানে যে কোনো সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ থাকবে৷ শনিবার থেকে বাস-ট্রেনে আবার অর্ধেক যাত্রী থাকবে৷

নির্দেশনাসমূহ

দোকানপাট, শপিংমল, বাজার এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক৷

অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক, অন্যথায় আইন অনুযায়ী শাস্তি পেতে হবে৷

রেস্তোরাঁয় খাওয়া এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য টিকা সনদ অবশ্যই দেখাতে হবে৷
১২ বছরের বেশি বয়সের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্ধারিত তারিখের পরে টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না৷

স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে৷ বন্দরে ক্রুদের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে৷ স্থলবন্দরগুলোয় আসা ট্রাকের সাথে শুধুমাত্র চালক থাকতে পারবে, কোনো সহকারী আসতে পারবে না৷ বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে৷

ট্রেন, বাস এবং লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নেওয়া যাবে৷ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে৷ সব ধরনের যান চালক ও সহকারীদের টিকার সনদ থাকা বাধ্যতামূলক৷

বিদেশ থেকে আসা যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে কোভিড-১৯ টিকাকার্ড প্রদর্শন এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে৷

স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক পরার বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামদের সংশ্লিষ্টদের সচেতন করতে হবে৷ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন৷

সর্বসাধারণের করোনা টিকা এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার এবং উদ্যোগ নেবে৷ এক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নিবে৷

উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে৷

ক্ষেত্র বিশেষে কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবে৷

২০২০ সালে বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণের শুরু হলে মার্চের শেষ দিকে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করা হয়, যা দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলে৷ তবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টির পর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে৷

করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনের দাপটে গতবছরের মাঝামাঝি সময়ে রোগীর চাপে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল৷ দৈনিক শনাক্ত রোগী ১৬ হাজারও ছাড়িয়ে যায়, এক দিনে আড়াইশর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়৷

অর্থনীতি আর জীবিকা বাঁচাতে আগের মত সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া ‘লকডাউন’ ব্যবসায়ীরা চান না৷ এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বুধবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, লকডাউনই সমাধান নয়, জোর দিতে হবে টিকা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতায়৷

নাগরিকদের দ্রুত টিকার আওতায় এনে, সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করে যতটা সম্ভব জনজীবন সচল রাখতে চাইছে সরকার৷ দেশের প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ অন্তত এক ডোজ এবং ৩২ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন৷ বয়স্ক ও ফ্রন্টলাইনারদের বুস্টার ডোজ দেওয়া চলছে৷

এসএইচ-০৩/১৩/২২ (অনলাইন ডেস্ক)