প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস জিতলেন জারীন

মানুষ ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে ছোটবেলার। একাডেমিক থিসিসেও সেই ইচ্ছেরই প্রতিফলন। বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার প্রক্রিয়া তুলে ধরে বুয়েট শিক্ষার্থী জারীন তাসনিম পেয়েছেন জুনিয়র নোবেল প্রাইস খ্যাত গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই অর্জনে গর্বিত প্রতিষ্ঠানসহ পুরো বাংলাদেশ।

ঢাকার মাতুয়াইল ল্যান্ডফিলে তিন দশক ধরে বর্জ্য অপসারণ করা হলেও অব্যবস্থাপনার কারণে বাড়ছে দূষণ, ব্যাহত হচ্ছে জীবনধারণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে স্নাতকের থিসিস তৈরি করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জারীন তাসনীম। লক্ষ্য ছিল, বর্জ্যের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে পরিবেশ রক্ষা।

গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস বিজয়ী জারীন তাসনীম শরীফ জানান, এটি অর্থনৈতিক কোনো প্রকল্প না হলেও এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ল্যান্ডফিল মাইনিং করে ল্যান্ডফিলের মধ্যকার বর্জ্য থেকে আমরা অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে আনতে পারি। এছাড়া বর্জ্য অপসারণের স্বাস্থ্যগত ও বৈজ্ঞানিক দিক আছে, যার অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না। তাই, ল্যান্ডফিল পরিবেশকে দূষিত করে।

এই থিসিসই জারীনকে এনে দেয় বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ একাডেমিক পুরস্কার গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস। ২৫টি ক্যাটাগরিতে ৭৩টি দেশের দুই হাজার ৮১২টি থিসিসের মধ্যে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে স্থাপত্যে এই অর্জন জারিনের। তিনি বলেন, যেহেতু এটা খুবই মর্যাদাপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম এবং বাংলাদেশের হয়ে গ্লোবাল উইনার হিসেবে প্রজেক্টটি সেখানে উপস্থাপন করতে পারবো, সে জন্য আমি সবচেয়ে বেশি আনন্দিত। মানুষ ও শহরের জন্য এই প্রজেক্টকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি। আর এ প্রসঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক একটি প্ল্যাটফর্ম পাওয়া আমার কাছে বড় বিষয়।

এমন প্রাপ্তির উচ্ছ্বাস ছুঁয়েছে জারীনকে। তবে স্মরণ করতে ভোলেননি সারথী ও সতীর্থদেরও। যমুনা টেলিভিশনকে জানালেন, স্বপ্ন পূরণে চ্যালেঞ্জ ও অবিচল লক্ষ্যের কথাও। জারীন তাসনীম শরীফ বলেন, এই প্রজেক্টটি আমার একার নয়। আমার সুপারভাইজারদেরও প্রজেক্ট।

তাছাড়া বন্ধু ও সিনিয়রদের সাথেও আমি আলোচনা করেছি, সমস্যার কথা জানিয়েছি, তারা আমাকে সাজেশন দিয়েছে। এই প্রাপ্তি স্থাপত্য এবং পুরো বুয়েটের জন্য় একটি সম্মান। আমার বাবা-মার জন্যও এটি অত্যন্ত গৌরবের। আমি এমন একটা সিস্টেম গড়ে তুলতে চাই, যেখানে ল্যান্ডফিলের প্রয়োজনই হবে না।

আগামী ৬ থেকে ৯ নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে স্বর্ণপদক গ্রহণ ও থিসিস উপস্থাপন করবেন লাল সবুজের এই প্রতিনিধি।

এসএইচ-১০/২৩/২২ (অনলাইন ডেস্ক)